• সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ প্রচারে জোর, পাঁচটি ক্লাবকে পুরস্কার, গতবছরের চেয়ে কমলেও জলপাইগুড়ি জেলায় ন’মাসে ৩৭১টি দুর্ঘটনা, মৃত ৯২
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: গতবছরের চেয়ে কিছুটা কমলেও গত ন’মাসে জলপাইগুড়ি জেলায় ৩৭১টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯২ জনের। বৃহস্পতিবার সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে জেলা পুলিশের তরফে এই পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শৌভনিক মুখোপাধ্যায় বলেন, গতবছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলায় ৩৭৪টি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। এর জেরে মৃত্যু হয় ১০৫ জনের। সেখানে এ বছর গত ন’মাসে দুর্ঘটনার সংখ্যা খুব বেশি না কমলেও দুর্ঘটনাজনিত কারণে মৃত্যু কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হয়েছে। দুর্ঘটনা রুখতে জেলাজুড়ে পুলিশের তরফে একাধিক পদক্ষেপ হয়েছে। যদিও শুধুমাত্র ট্রাফিক আইন কিংবা জরিমানা করে দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব নয়, সাধারণ মানুষকে এ ব্যাপারে আরও সচেতন হতে হবে বলে জানান পুলিশ সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দুর্ঘটনা রুখতে আমরা সারাবছর সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি। এই প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে। তবে পুলিশের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ, বিভিন্ন ক্লাব কিংবা সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে। 

    এবার দুর্গাপুজোয় জলপাইগুড়ির যেসব ক্লাব ট্রাফিক সচেতনতা নিয়ে খুব ভালোভাবে প্রচার চালিয়েছে, তাদের মধ্যে থেকে পাঁচটি ক্লাবকে এদিন আর্থিকভাবে পুরস্কৃত করা হয়। অন্য ক্লাবগুলিও যাতে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসে, সেকারণে এই উদ্যোগ বলে জানানো হয়েছে জেলা পুলিশের তরফে। 

    গত একবছরে জলপাইগুড়ি জেলায় ট্রাফিক সচেতনতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মসূচি হয়েছে বলে এদিন দাবি করা হয় পুলিশের তরফে। একবছরে তারা প্রায় ৩০০ স্কুলে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকরা। তাঁদের দাবি, জলপাইগুড়ি শহরে নতুন করে ছ’টি জায়গায় ট্রাফিক সিগন্যাল বসানো হয়েছে। সাতটি জায়গায় হয়েছে ট্রাফিক বুথ। হাইওয়েতে লাগানো হয়েছে সোলার লাইট। এদিন পুলিশ সুপার বলেন, অনেকে মনে করেন হাইওয়েতে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু আমরা পরিসংখ্যান যাচাই করে দেখেছি, যত দুর্ঘটনা ঘটছে তার বেশিরভাগই শহর ও গ্রামের রাস্তায়। ওইসব রাস্তা দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে বাইক, গাড়ি ছুটছে। নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে কখনও নিজেরাই রাস্তার পাশের নয়ানজুলিতে কিংবা গাছে, বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা মারছে। কখনও আবার সরাসরি কোনও যানবাহন কিংবা ব্যক্তিকে ধাক্কা দেওয়ায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা রুখতে শহর ও গ্রামের রাস্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে স্পিড ব্রেকার বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা নিয়েও আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, এত স্পিড ব্রেকার কেন? পুলিশ সুপার বলেন, যেভাবেই হোক পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমাতে হবে। রোজ জলপাইগুড়ি জেলায় সাতশোর বেশি পুলিশকর্মী রাস্তায় থাকেন। তারপরও দুর্ঘটনা ঘটছে। এর কারণ সাধারণ মানুষের অনেকেই এখনও সচেতন নন। নিজেরা সচেতন হলে অনেকক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা এড়ানো যায়। 

     নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)