মন-থা’য় চিন্তার ভাঁজ, আগেভাগে সরানো হল ৯০০ পরিবারকে
বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা: ঘূর্ণিঝড় মন-থা’র পরোক্ষ প্রভাবে ফের বিপর্যয়ের শঙ্কা। তাই বৃহস্পতিবার দার্জিলিং পাহাড়ের ৫টি ব্লকের বিপজ্জনক এলাকা থেকে শতাধিক পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই ধরনের ব্যবস্থা জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনও নিয়েছে। বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গে তৈরি হয়েছে ঠান্ডার আমেজ। তবে ধান, আলু ও সবজি চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা। বৃষ্টির জল যাতে না জমে তারজন্য চাষিরা কিছু জায়গার জমিতে নালা কেটেছেন।
মন-থা’র পরোক্ষ প্রভাবের দোসর পশ্চিমীঝঞ্ঝা। যার জেরে দু’দিন ধরেই শিলিগুড়ির আকাশ মেঘলা। এদিন দিনের অধিকাংশ সময় ঝিরঝিরে বৃষ্টি হয়। ফলে ঠান্ডার আমেজ তৈরি হয়েছে। আজ, শুক্রবার দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ে, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ ব্যাপারে এদিন বিভিন্ন দপ্তরকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে প্রশাসন। দার্জিলিং জেলা প্রশাসন অতিরিক্ত কয়েকটি ত্রাণ শিবির চালু করেছে। ধসপ্রবণ মিরিক, জোরবাংলো-সুখিয়াপোখরি, দার্জিলিং-পুলবাজার, রংলিরংলিয়ট, কার্শিয়াং ব্লকের বিপজ্জনক স্থান থেকে কিছু পরিবারকে সরিয়ে নিয়েছে। পূর্ত, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য, পিএইচই, সেচ সহ বিভিন্ন দপ্তরকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক মণীষ মিশ্র বলেন, দুর্যোগের পুর্বাভাস মেলায় পাহাড়ে ধসপ্রবণ ও বিপজ্জনক এলাকা থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরানো হয়েছে। আটটি ত্রাণ শিবির আগে থেকেই চলছিল। অতিরিক্ত ১২টি শিবির করা হয়েছে। প্রতিটি শিবিরে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে। নতুন করে শিবিরের জন্য ১০০টি স্কুল চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার খণ্ডবাহালে উমেশ গণপত বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত যাতে ঝাঁপিয়ে পড়া যায়, সেজন্য আগাম সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। ঝড়, বৃষ্টির সময় কেউ যাতে পাহাড়ি নদীতে না নামেন কিংবা জমিতে ফসল কাটতে না যান, সেব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিন কোচবিহার, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারেও দিনভর আকশ মেঘলা ছিল। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়। বিকেলে নাগরাকাটার বামনডাঙা চা বাগানের মডেল ভিলেজ, ১৮ নম্বর লাইন, হাতি লাইন ও বিচ লাইনের ৮০০ পরিবারকে ফ্যাক্টরির অস্থায়ী ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। ধূপগুড়িতে জলঢাকা নদীর পাশে তাঁবুতে থাকা দুর্গতদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রশাসনের লোকজন এলে তাঁরা বিক্ষোভ দেখান। বাঁধ মেরামতের দাবি জানান। এদিকে, বৃষ্টিতে আমন ধান, আলু সহ সবজি চাষে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে জলদাপাড়ায় ডলমাইট মিশ্রিত পলিতে দ্রুত সবুজ ঘাস গজাবে বলেই বনকর্তাদের প্রত্যাশা। এতে উপকৃত হবে বন্যপ্রাণীরা।  নিজস্ব চিত্র।