• প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নামে সাইবার প্রতারণা, খড়গ্রামের বাসিন্দার সাড়ে ৯ লক্ষ উধাও
    বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: সাইবার প্রতারকদের এখন প্রথম পছন্দ মোদি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নামে শুরু হয়েছে সাইবার প্রতারণা। হোয়াটসঅ্যাপে কল করে বলা হচ্ছে, পিএমএওয়াই অফিস থেকে বলছি। প্রিমিয়াম নম্বর থেকে ফোন আসতে দেখে সহজেই বিশ্বাস করছে আমজনতা। তারপর ওই প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে একটি অ্যাপ আসছে সাধারণ মানুষের মোবাইলে। সেই অ্যাপ মোবাইলে ইন্সটল করলেই নিমিষেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ মানুষকে টার্গেট করেছে প্রতারকরা। যাদের বাড়িঘর নেই কিংবা বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করেছে, এমন বাসিন্দাদের টার্গেট করেই ফোন করছে সাইবার প্রতারকদের গ্যাং। তারপর লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। 

    এমনই ফোন পেয়ে সরল বিশ্বাসে মোবাইলে অ্যাপ ইনস্টল করে নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় সাড়ে ন’লক্ষ টাকা খোয়ালেন খড়গ্রামের এক বাসিন্দা। টাকা খুইয়ে তিনি এনসিআরপি পোর্টালে অভিযোগ জানিয়েছেন। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। আদৌ টাকা ফেরত পাবেন কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন খড়গ্রামের ইন্দ্রাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই বাসিন্দা। 

    জানা গিয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একটি ফোন আসে। বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অফিস থেকে বলছি। প্রথমে অবিশ্বাস হলেও প্রিমিয়াম নম্বর ও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো ওই প্রতারকের একটি ফেক আইডি কার্ড দেখে তিনি আশ্বস্ত হন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি পেলে সুবিধাই হবে, সেই ভেবে ওই বাসিন্দা প্রতারকের কথায় বিশ্বাস করে মোবাইলে আসা এপিকে ফাইলটি ইনস্টল করেন। তারপর কয়েক মিনিটের মধ্যে ওই নম্বরের সঙ্গে যুক্ত থাকা একটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে সাফ হয়ে যায় ৯ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এভাবে তিনি প্রতারকদের খপ্পরে পড়বেন, তা ভাবতেই পারেননি ওই ব্যক্তি। তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন। মুর্শিদাবাদের সাইবার থানা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

    ওটিপি জেনে সাইবার প্রতারণার ঘটনা এখন পুরনো হয়ে গিয়েছে। এখন  প্রতারকরা বড় অঙ্কের টাকা টার্গেট করছে। সেইমতো ডিজিটাল অ্যারেস্টের মাধ্যমে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। তবে এনিয়ে সাইবার বিভাগ মানুষজনকে সতর্ক করার পর প্রতরকরা নতুন ফঁদি আঁটতে শুরু করেছে। তারা এখন সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পকে হাতিয়ার করেছে। বাড়ি পাইয়ে দেওয়া বা কোনও প্রকল্পের পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সাফ করে দিচ্ছে। এনিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন আধিকারিকরা।

    সাইবার থানার পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, খড়গ্রামের ওই ব্যাক্তি অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রতারকরা একই কায়দায় এর আগেও বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। না জেনে কোনও অ্যাপ নিজের মোবাইলে ইন্সটল করা যাবে না। অজানা নম্বর থেকে আসা হোয়াটসঅ্যাপ কল এবং বিভিন্ন অফারের টোপ এড়িয়ে যেতে হবে। না হলে এভাবেই বিপদ বাড়বে।
  • Link to this news (বর্তমান)