বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শিক্ষিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ, রামপুরহাট শহর সহ সভাপতিকে বহিষ্কার
বর্তমান | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ধর্ষণের অভিযোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তৃণমূলের রামপুরহাট শহর সহ সভাপতি প্রিয়নাথ সাউ ওরফে টিঙ্কুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হল। বৃহস্পতিবার দলের পার্টি অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহিষ্কারের কথা জানান তৃণমূলের জেলা চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতোই অভিযুক্ত নেতাকে বহিষ্কার করা হল। যদিও অভিযুক্ত নেতাকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। এদিন আদালতে ওই শিক্ষিকার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। এদিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতারের দাবিতে থানায় বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা।
অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রামপুরহাট পুরসভার ৮নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। সম্প্রতি রাজ্য নেতৃত্ব তাঁকে শহরের সহ সভাপতির দায়িত্ব দিয়েছিল। রাজ্যের ঘোষিত তালিকায় থাকা পদাধিকারীদের নিয়ে বুধবার দলীয় কার্যালয়ে সংবর্ধনার আয়োজন করে তৃণমূল নেতৃত্ব। সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলাকালীন প্রিয়নাথের বিরুদ্ধে বিবাহিত হয়েও অবিবাহিত পরিচয়ে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেন এক শিক্ষিকা। ওই শিক্ষিকার বিয়ের পরও ভয় দেখিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্বামীর সঙ্গে ওই শিক্ষিকার বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। শিক্ষিকার অভিযোগ, গত শনিবার স্কুলে যাওয়ার পথে ওই তৃণমূল নেতা নিজের ক্ষমতা জাহির করে হুমকি দেন। এমনকী, পুরো পরিবারকে শেষ করে দেওয়ার পাশাপাশি চাকরি খেয়ে খেয়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এরপরই পুলিসের দ্বারস্থ হন ওই নেতা। অভিযোগ দায়ের হতেই ওই নেতা গা ঢাকা দিয়েছেন।
তৃণমূল সূত্রের খবর, বিষয়টি জানতে পেরে বেজায় ক্ষুব্ধ অভিষেক। রাতেই দলের চেয়ারপার্সন আশিসবাবুকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ওই নেতাকে দল থেকে অনির্দিষ্টকাল বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। সেইমতো এদিন দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান আশিসবাবু। পাশাপাশি তিনি বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা না মেনে যদি কোনও নেতা-কর্মী অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন তাহলে দল রেয়াত করে না। অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ ওঠার পরই দল তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের সমস্ত পদ থেকে তাঁকে অপসারিত করা হয়েছে। দলীয় কাউন্সিলার হিসাবেও তাঁকে গ্রাহ্য করা হবে না।
এব্যাপারে অভিযুক্ত নেতা বলেন, অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওই শিক্ষিকা আমার ভালো বন্ধু। আমার বাড়িতে আসা যাওয়া ছিল। আমি বিবাহিত তিনি ভালো করেই জানেন। কারও প্ররোচনায় পা দিয়ে আমাকে ফাঁসানো হল। এব্যাপারে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, ধর্ষকদের দল তৃণমূল কংগ্রেস। নারী নির্যাতনের নায়ক যারা তাদেরই ওই দলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ঘটনা তো আজকের নয়। এতকিছু জানার পরও এই ধরনের চরিত্রের লোকজনকে পদ দেওয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাই।