সংবাদদাতা, কান্দি: ঘূর্ণিঝড় মনথার প্রভাব পড়েছে মুর্শিদাবাদের সালারের কা-গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোয়। একদিনের এই পুজোয় অন্য বছরগুলিতে সকাল থেকেই দর্শনার্থীর ভীড় উপচে পড়ে। কিন্তু আকাশের মুখ ভার থাকায় বৃহস্পতিবারের সকালে তেমন জমায়েত দেখা গেল না কা-গ্রামের এই মণ্ডপে। উদ্যোক্তাদের দাবি, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সকাল থেকে হালকা বৃষ্টির দরুণ দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হয়েছে। তবে সন্ধ্যার পর জমায়েত স্বাভাবিক হবে বলে অনুমান তাঁদের।
কিন্তু দর্শনার্থীর সংখ্যা কম হলেও পুজোর উন্মাদনায় কোনও খামতি নেই। কা-গ্রামের ২৯টি মণ্ডপেই ভোর থেকে পুজোর জন্য একেবারে সাজ সাজ অবস্থা। মহাশয়বাড়ির পুজোয় ভোরের আলো ফোটার আগে থেকেই তোড়জোর দেখা গিয়েছে। পরিবারের সদস্যরা ভোর থেকে মণ্ডপ চত্বর পরিষ্কারের কাজে নামেন। পালবাড়ির পুজোতেও উদ্যোক্তারা সকাল থেকে কর্মীদের মণ্ডপ সাফাই করার নির্দেশ দেন। সাহাপাড়া সর্বজনীন পুজোর উদ্যোক্তারা সাতসকালেই পুজোর তদারকি শুরু করছিলেন। সেখানে যুবকদের বাইকে করে ফুল, ফল, বেলপাতা সংগ্রহ করতে দেখা গিয়েছে। বেলা বাড়তেই মহিলারা পুজোর ডালি নিয়ে মণ্ডপে, মণ্ডপে হাজির হয়েছেন।
এরপর সকাল সাতটা নাগাদ ঢাকের তালে মহাষষ্ঠীর পুজো শুরু হয় কা-গ্রামের প্রতিটি মণ্ডপে। কিন্তু আকাশের মুখ ভারি। ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় তাল কাটে দর্শনার্থীর আগমনে।
উদ্যোক্তারা জানান, অন্য বছরগুলিতে সাতসকালেই প্রতিবেশী গ্রামগুলি থেকে দর্শনাথীরা ভীড় জমান। কিন্তু এবছর সকালের দিকে দর্শনার্থীর সংখ্যা খুবই কম ছিল। পুজোর উদ্যোক্তা তাপসকুমার রায় বলেন, এর প্রধান কারণ বৃষ্টি। বৃষ্টির জন্য দর্শনার্থীরা বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি। তবে প্রত্যেক পুজো কমিটি দর্শনার্থীদের বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে ব্যবস্থা নিয়েছে।
পালবাড়ির পুজোয় দেখা গিয়েছে মন্দিরের সামনের চত্বরে ছাউনি দেওয়া বড় আকারের প্যান্ডেল হয়েছে। ওই ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে পুজো দেখেন প্রচুর দর্শনার্থী। সেখানে হাজির প্রতিবেশী সমস্তিপুরের সমীরণ সাহা বলেন, বৃষ্টি পড়ছে বলে একাই এসেছি। বৃষ্টি না হলে বাড়ির অন্যরাও আসতেন। তবে সন্ধ্যায় আবহাওয়া ভাল থাকলে সবাই ঠাকুর দেখতে বেরোবেন। এদিকে এদিন দুপুরের দিকে আবহাওয়া একটু ভাল হয়ে আসে। আকাশ পরিষ্কার হয়। সেই সময় রীতি অনুযায়ী প্রতিটি পুজো মণ্ডপ থেকে ঢাকিদের বাজনার দল নিয়ে গ্রামে শোভাযাত্রা হয়। চেনা ছন্দে ফিরতে থাকে জগদ্ধাত্রী পুজোর উন্মাদনা। ঢাকের তালে রাস্তায় যুবকদের নাচতেও দেখা যায়।  নিজস্ব চিত্র