• ভাঙা-গড়ায় এত জায়গা কোথায়? চিন্তায় পুরকর্তারা
    এই সময় | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • দেবাশিস দাস

    বড়বাজার-পোস্তা এলাকার জরাজীর্ণ বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার ব্যাপারে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই নির্দেশ কার্যকর করার রাস্তা খুঁজতে গিয়ে ফাঁপড়ে পড়েছেন বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা। তাঁদের অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, তার কোনও বিকল্প হতে পারে না। তবে বড়বাজারের এই নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে অন্তরায় হচ্ছে পর্যাপ্ত জায়গার অভাব। একটি পুরোনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ জায়গার দরকার হয়, পোস্তা এবং বড়বাজারের অধিকাংশ পাড়াতেই সেই জায়গা নেই। তাই বিকল্প পথ কী হতে পারে এখন সেই রাস্তাই খুঁজছেন পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা।

    চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পোস্তার বড়তলা স্ট্রিটে খসে পড়েছিল বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ। প্রাণহানি বা জখম হওয়ার মতো ঘটনা না ঘটলেও, এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন স্থানীয়রা। প্রতি বর্ষাতেই বড়বাজার এলাকায় জরাজীর্ণ ও বিপজ্জনক বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা ঘটে। কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, কলকাতা পুর এলাকায় জীর্ণ পুরোনো বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। এর দশ শতাংশ হচ্ছে অতি বিপজ্জনক। যার অধিকাংশই রয়েছে, পোস্তা, বড়বাজার-সহ উত্তর ও মধ্য কলকাতার বিভিন্ন এলাকায়।

    বুধবার পোস্তায় জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বড়বাজারের জীর্ণ বাড়িগুলির সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে উদ্যোগী হওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সময়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমও মঞ্চে ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরে বৃহস্পতিবার বড়বাজারের জীর্ণ বাড়ির সমস্যা সমাধান কোন পথে হতে পারে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেন পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকরা।

    তাঁদের যুক্তি, বড়বাজার-পোস্তা এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জীর্ণ ও পুরোনো বাড়িগুলি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার থেকে অত্যাধুনিক উপায়ে সংস্কার এবং মেরামতি করা অনেক সহজ হবে। তবে সবটাই নির্ভর করবে বাড়ির বয়স এবং কাঠামো কোন পরিস্থিতিতে রয়েছে তার উপরে। যে সব বাড়ির একেবারই ভগ্ন দশা সেই ক্ষেত্রে এক মাত্র বাড়ি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা যেতে পারে।

    পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, 'নথি ঠিক থাকলে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ির সমস্যার সমাধান করা খুব কঠিন নয়। সমস্যা হচ্ছে ঠিকা জমির বাড়ি নিয়ে।' ঠিকা জমির বাড়ি সংস্কারের জন্য কলকাতা পুরসভা নিয়ম আগের থেকে অনেক সহজ করেছে। তার পরেও বড়বাজার-সহ কলকাতার সর্বত্র ঠিকা জমিতে থাকা বাড়ি নিয়ে বাসিন্দাদের কাছ থেকে সেই ভাবে সাড়া মিলছে না বলে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের একাধিক আধিকারিক জানান।

  • Link to this news (এই সময়)