আজকাল ওয়েবডেস্ক: মেট্রো যেন বিভীষিকা। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা পর পর একাধিক ঘটনা থেকে তেমনটাই বলছেন খাস কলকাতার মেট্রো-যাত্রীরা। আর তাঁদের অভিযোগের যেন মান্যতা শুক্র সকালে। থমকে গেল মেট্রো রেলের চাকা। শুক্রবার সকালে আচমকাই দমদম স্টেশনে ঘোষণা করা হয়, আপ ও ডাউন লাইনে মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। যদিও প্রাথমিকভাবে কারণ জানা না গেলেও, পরে জানা যায়, অটো সিগন্যালিং সিস্টেমে জরুরি অনির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজের কারণে, শহীদ ক্ষুদিরাম থেকে গিরিশ পার্কের মধ্যে মেট্রো চলাচল বন্ধ থাকবে।
শুক্রবার সকাল সওয়া আটটা নাগাদ এই ঘোষণা করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই ঘোষণায় ক্ষোভের প্রকাশ। সেইসময় মেট্রো স্টেশনে পড়ুয়া, চাকুরীজীবী-সহ বহু মানুষ মেট্রোর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘোষণায় বিপাকে পড়েন তাঁরা। যদিও ঘণ্টাখানেক পরে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়ে যায়।
এর আগেও, সেপ্টেম্বরে বারেবারে ব্যাহত হয়েছে মেট্রো পরিষেবা। ১১ সেপ্টেম্বর, কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সব ট্রেন শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত চালানো সম্ভব হয়নি সাময়িকভাবে। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়ে, এই সমস্যার ফলে দমদম-কবি সুভাষ শাখায় ২৭২টি পরিষেবার মধ্যে ব্যস্ত সময় ও অন্যান্য সময় মিলিয়ে ৩২টি ট্রেন মহানায়ক উত্তমকুমার স্টেশন থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় দক্ষিণেশ্বরের দিকে। এতে পিক আওয়ারে ৫ মিনিট অন্তর এবং নন-পিক আওয়ারে ৭ মিনিট অন্তর ট্রেন চলাচল বজায় রাখা সম্ভব হয়। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীদের সহযোগিতা ছাড়া এই ব্যবস্থা সুচারুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়।
এর আগে, ৮ সেপ্টেম্বর, দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরামের দিকে যাওয়ার সময়ে মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) স্টেশনের পর থেকে আর চলাচল করেনি মেট্রো অনেকক্ষণ। বাধ্য হয়েই যাত্রীদের টালিগঞ্জেই নামতে হয়। মেট্রো সূত্রে জানা যায়, কবি নজরুল স্টেশনে মেট্রোর একটি রেকে সমস্যা দেখা যায় সকাল ৮.২০ মিনিট নাগাদ। তার জেরেই মেট্রো পরিষেবায় চরম বিভ্রাট।
সোমবার সকাল তখন ৮.২০ মিনিট। সেই সময়ই কবি নজরুল স্টেশনে শহিদ ক্ষুদিরামগামী একটি মেট্রো রেক দাঁড়িয়ে পড়ে। মেট্রো রেল সূত্রে খবর, যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে রেকটি দাঁড়িয়ে পড়ে। নামিয়ে দেওয়া হয় যাত্রীদের। যান্ত্রিক ত্রুটির ফলে কবি নজরুল থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। মহানায়ক উত্তমকুমার (টালিগঞ্জ) স্টেশন থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রো চলছিল। এভাবে প্রায় ঘণ্টাখানেক কেটে যায়। মেট্রোর তরফে খবর, সকাল ৯টা ২৫ মিনিট নাগাদ ওই রেকটিকে কারশেডে পাঠানো সম্ভব হয়। সকাল ৯টা ৫৪ মিনিট থেকে ফের মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়।
অফিস টাইমে মেট্রো বিভ্রাটের জেরে যে পরিমাণ ভিড় জমে যায় স্টেশনগুলিতে। ফলে পরিষেবা স্বাভাবিক হতে কিছুটা সময় যে লাগে যায়। গত মাসেই হাওড়া থেকে সেক্টর ফাইভ -সহ নতুন তিন রুটের মেট্রো পরিষেবা চালু হয়েছে সম্প্রতি। তারপর থেকে ব্লু লাইনের (দক্ষিণেশ্বর-শহিদ ক্ষুদিরাম) মেট্রো পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে আসছে। প্রায় রোজই ট্রেন দেরিতে আসে। তার উপর আবার মেট্রোর দরজা সময়মতো বন্ধ না হওয়ার ফলে দীর্ঘক্ষণ একই স্টেশনে দাঁড়িয়ে রয়েছে মেট্রো। নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে যাত্রীদের।