• মাত্র ২২ মাসেই ঠোঁটস্থ সব! গিনেস বুকে নাম বেহালার ‘সর্বজ্ঞানী’ শ্রেয়াংশের
    প্রতিদিন | ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • অভিরূপ দাস: চার বছরের অমূল্য গড় গড় করে বলে দিচ্ছিল কাক-চড়ুইয়ের বিজ্ঞানসম্মত নাম। প্রফেসর শঙ্কুর চোখ দেখেই জানিয়ে দেয় চশমার পাওয়ার মাইনাস সিক্স! শুধু সত্যজিৎ রায়ের গল্পে নয়, এমন বিস্ময় খোকার হদিশ মিলেছে বাস্তবেই।

    জানা গিয়েছে, মাত্র বাইশ মাসে বয়সেই বেহালার শ্রেয়াংশ অক্লেশে চিনিয়ে দিচ্ছে ইউরোপের দশ দেশের পতাকা। ছবি দেখে বুঝিয়ে দিচ্ছে কে দাঁতের চিকিৎসক, কে মহাকাশচারী। স্রেফ পোশাক দেখে বলে দিচ্ছে কারা বিমান সেবিকা কারা নিরাপত্তারক্ষী। শুধু কি তাই! পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য তাঁর ঠোঁটের ডগায়। ছবি দেখেই বলে দিচ্ছে “ওই তো ব্রাজিলের ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার। এটা চিনের মহাপ্রাচীর। ওটা তো পেরুর মাচুপিচু।” এ সবই ঘটছে সেকেন্ডের মধ্যে। কী করে এত অল্প বয়সে এমন মেধা? চিকিৎসকরা বলছেন, সকলের মস্তিষ্ক একরকম কাজ করে না। জেনেটিক বা বংশগত কারণে অনেকেরই অল্প বয়সে স্মৃতিশক্তি-বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা বেশি। যাদের মস্তিষ্কে নিউরনের মধ্যে যোগাযোগ দ্রুত তাদের তথ্য বোঝার এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে একটু বেশি। তেমনটা কি শ্রেয়াংশেরও?

    শ্রেয়াংশের মা এসএসকেএমের নার্সিং অফিসার। ছেলের বিশেষ ক্ষমতা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “ও ছোট থেকেই যা দেখে সঙ্গে সঙ্গে মুখস্থ করে নেয়। কোনও ফুল, ফল, পশুপাখি একবার দেখলে ওর মনে গেঁথে যায়। পরে কখনও সেই ফুল-ফলের নাম ছবি দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলে ও ঝটপট চিনে নেয়।” যেখানে তিন সাড়ে তিনেও এবিসিডি বলতে গিয়ে থমকে যায় অনেক একরত্তি। বাইশ মাসের শ্রেয়াংশ গড়গড় করে চিনিয়ে দিচ্ছে কোনটা ‘কিউ’, কোনটা ‘এম’। বিস্ময়কর এ ক্ষমতার খবর পৌঁছে গিয়েছে বাইরেও। বেহালা সরশুনার বাসিন্দা শ্রেয়াংশকে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস। শ্রেয়াংশের মা শ্বেতার কথায়, “কোনও বিষয়ে কেউ যদি অসাধারণ কিছু কৃতিত্বের ছাপ রাখতে পারে তা জানানো যায় ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে। তাদের তরফ থেকে সেটা যাচাই করে দেখা হয়। আমরাও প্রতিভার নমুনা পাঠিয়েছিলাম ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসকে। মিলেছে স্বীকৃতি।”

    গল্পে উঠোনে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্টি ‘বিস্ময় খোকা।’ তার পর থেকেই তার চমৎকার ক্ষমতার বহিপ্রকাশ। বাস্তবে যদিও তেমনটা হয়নি। শ্রেয়াংশের মা জানিয়েছেন, “যখন ওর এক বছর বয়স তখন থেকে ওকে বিভিন্ন জিনিসের ছবি দেখাতে শুরু করি। দেখতাম কোনও জিনিস চার-পাঁচবার দেখানোর পর ওকে জিজ্ঞেস করলেই ও বলতে পারছে। এভাবেই ধীরে ধীরে বুঝতে পারি ওর স্মৃতিশক্তি বেশ প্রখর।” আগামীতে ক্ষমতা জাহির নয়। শ্বেতা চান ছেলের স্মরণশক্তির নৈপুণ্য প্রকাশ পাক তার পড়াশোনায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)