‘কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরুক চাই না’, পুত্র-সহ রুশ বধূর দেশ ছাড়ার মামলায় বলল সুপ্রিম কোর্ট
প্রতিদিন | ০১ নভেম্বর ২০২৫
সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন চন্দননগরের রাশিয়ান বধূ ভিক্টোরিয়া জিগালিনা বসু। শুক্রবার সেই মামলার শুনানিতে শিশুটির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ‘আদালত চায় না এমন কোনও নির্দেশ দিতে, যার জেরে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের উপর প্রভাব পড়ে।’ দু’সপ্তাহ পর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে আদালত বিদেশমন্ত্রক-সহ অন্যান্য মন্ত্রক ও দপ্তরকে এই সময়ের মধ্যে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
শুক্রবার বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। যেখানে দিল্লি পুলিশ ও বিদেশমন্ত্রক আদালতে নিজেদের স্ট্যাটাস রিপোর্ট জমা দেয়। সেই রিপোর্টে এক জায়গায় বলা হয়েছে, স্টেট ব্যাঙ্ক অব রাশিয়ার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে কিছু খরচ করেছিলেন ভিক্টোরিয়া। দিল্লি পুলিশ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কের থেকে কিছু তথ্য চেয়ে পাঠালে তারা তা দিকে অস্বীকার করে। বিদেশমন্ত্রক জানায়, তারা রাশিয়ার দূতাবাসকে বারবার চিঠি লিখেও তেমন ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছে না। এই সময় ভিক্টোরিয়ার স্বামী সৈকত বসুর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে বলেন, বিদেশমন্ত্রক শুধু চিঠিই লিখে যাচ্ছে। তাতে কী হবে? ওরা গঠনমূলক কোনও পদক্ষেপ করুক।
ব্লু কর্নার নোটিসেও কোনও কাজ না হওয়ায় ভিক্টোরিয়ার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারির চেষ্টা করার জন্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাট্টিকে নির্দেশ দেয় আদালত। ইন্টারপোল রেড কর্নার নোটিস জারি করলে রুশ কতৃপক্ষ বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে সহযোগিতা করতে পারে বলে পর্যবেক্ষণ বিচারপতি সূর্যকান্তর। গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, ব্লু কর্নার নোটিসে কাজ হচ্ছে না বলেই রেড কর্নার নোটিস জারি করার চেষ্টা করা হোক৷ আমরা চাই না, এটা মানব পাচারের বিষয় হয়ে উঠুক৷ এই সময় বিচারপতিদের বলতে শোনা যায়, তাঁরা আশা করছেন মায়ের সঙ্গে থাকায় শিশুটি খারাপ থাকবে না। এবং এই বিষয়টি শিশুপাচার সংক্রান্ত নয় বা রাশিয়ায় বাচ্চাটির উপর কোনও দমনপীড়নমূলক কিছু হচ্ছে না।
আদালত জানায়, ‘যাবতীয় পদক্ষেপ করতে হবে দু’দেশের কূটনৈতিক সুসম্পর্কের কথা মাথায় রেখে৷ আমরা চাই না এই ঘটনার জন্য ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়ুক৷’ উল্লেখ্য, এই বছর ভারত ও রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদারিত্বের রজতজয়ন্তী। ডিসেম্বরে ভারতে আসছেন রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন।