৪ নভেম্বর থেকে SIR হেল্পডেস্ক তৃণমূলের, বিএলও-দের ‘ছায়াসঙ্গী হোন’, BLA-দের নির্দেশ অভিষেকের
প্রতিদিন | ০১ নভেম্বর ২০২৫
কৃষ্ণকুমার দাস: এসআইআর কার্যকর হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। কোনও বৈধ ভোটারের নাম যাতে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধনের সময় বাদ না যায়, সেই লক্ষে শুক্রবার দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভারচুয়াল বৈঠক করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যজুড়ে হেল্পডেস্ক চালু করছে তৃণমূল। সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৬২০০ হেল্পডেস্ক কাজ করবে। SIR সংক্রান্ত জনতার সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে এসব হেল্প ডেস্ক। আরও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই কাজের সময় বিএলও-দের কার্যত ‘ছায়াসঙ্গী’ হওয়ার জন্য বিএলএ-দের পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। শুক্রবার এই ভারচুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন দলের সাংসদ, বিধায়ক, ব্লক সভাপতি, পঞ্চায়েত প্রধান-সহ প্রায় ১৫ হাজার নেতা। সকলকে এসআইআরের কাজকর্ম নিয়ে সম্যক ধারণা দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে বাংলায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআরের কাজ শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে বিএলও-দের প্রশিক্ষণের কাজ চলছে। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম বিলি ও ভোটার তালিকা পরীক্ষার কাজ। আর সেই সময়টা ধরেই হেল্পডেস্ক চালু করতে চলেছে তৃণমূল। গ্রাম, পঞ্চায়েত, পুর এলাকা সর্বত্র এই হেল্পডেস্ক তৈরি হবে। সেখানে থাকবে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ। এসআইআরের ফর্ম ফিলআপ করতে কোথাও কোনও সমস্যা হলে তার সমাধান করে দেবেন এই হেল্পডেস্কে থাকা কর্মীরা। এছাড়া কোনও অভিযোগ জানাতে হলে ‘দিদির দূত’ অ্যাপ খোলা থাকবে। দিনের সমস্ত কাজের খুঁটিনাটি রিপোর্ট দিনশেষে পাঠাতে হবে ক্যামাক স্ট্রিটে, অভিষেকের দপ্তরে।
রাজ্যে কমবেশি মোট ৯০ হাজার বুথ রয়েছে। সেখানে বিএলএ ১, বিএলএ ২-রা কাজ করবেন বিএলও-দের সাহায্যে। আর এখানে আরও সাবধানী পদক্ষেপ করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। শুক্রবারের ভারচুয়াল বৈঠকে অভিষেক বিএলএ-দের কার্যত নির্দেশ দিয়েছেন, বিএলও-দের ‘ছায়াসঙ্গী’ হওয়ার। সূত্রের খবর, ১ মিনিটের জন্যও যাতে বিএলও-দের চোখের আড়াল না করা হয়, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তাঁর অভিযোগ, বিজেপির লক্ষ্য নাম না থাকা বৈধ ভোটারদের নাম তোলা কিংবা অবৈধ ভোটারদের বাদ দেওয়া নয়। নিজেদের এজেন্ডা পূরণ।তাই বিএলও-দের উপর চাপ বাড়াতে পারে বিজেপি। সেই কারণেই তাঁদের ছায়াসঙ্গী হোন বিএলএ-রা, সেটাই চাইছে তৃণমূল।
এছাড়া অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এই কাজের জন্য পথে থাকবেন। এসআইআর সংক্রান্ত জনতার যে কোনও সমস্যা সমাধান কিংবা অভিযোগ জানানোর জন্য তাঁর ক্যামাক স্ট্রিটের দপ্তরে যোগাযোগের জন্য একটি নম্বরও দেওয়া হয়েছে। তা হল ? ৮১৪২৬৮১৪২৬. সবমিলিয়ে, এসআইআরে যাতে একজন বৈধ ভোটারেরও নাম না বাদ পড়ে, সেই লক্ষ্যে একেবারে দুর্গ গড়ে তুলছে শাসক শিবির।
এদিকে, তৃণমূলের এই হেল্পডেস্ক নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ”কী আর হবে ওসব ক্যাম্পে? বিএলও-দের হুমকি দেবে তৃণমূলের লোকজন।”