নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঘূর্ণিঝড় ‘মন-থা’-র অবশিষ্টাংশ নিম্নচাপ হিসেবে বিহারের উপর সরে আসার ফলে হিমালয় লাগোয়া উত্তরবঙ্গে শুক্রবার বৃষ্টির মাত্রা অনেকটা বেড়ে গেল। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস জানান, নিম্নচাপটি বিহারের উপর আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। শনিবার দুপুরের পর উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি কমতে পারে। আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের হিমালয় লাগোয়া সব জেলাতেই বেশি মাত্রায় বৃষ্টি হয়েছে। তবে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে। দু’টি জায়গাতেই সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত যথাক্রমে ১৪৯ ও ৮২ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। উত্তরবঙ্গের হিমালয় লাগোয়া চার জেলা—দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে বৃহস্পতিবারই অতিবৃষ্টির ‘লাল’ সতর্কতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর। জলপাইগুড়িতে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হবে এমনটাও বলা হয়েছিল। এরকম পরিস্থিতিতে, নিম্নচাপের ফলে বেশি পরিমাণে ঢোকা জলীয় বাষ্প পাহাড়ে ধাক্কা খেয়ে শক্তিশালী বৃষ্টির মেঘ তৈরি করে। এই কারণে পাহাড় লাগোয়া এলাকায় বেশি বৃষ্টি হয়। অক্টোবর মাসের শুরুতেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া একটি অতিগভীর নিম্নচাপ স্থলভূমিতে ঢোকার পর বিহারের উপর নিম্নচাপ হিসেবে আসে। তার প্রভাবে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং ও তরাই-ডুয়ার্স এলাকায় অতিবৃষ্টিতে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের ওই অংশে এবারও প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি হবে। তবে সেই বৃষ্টির পরিমাণ আগের বারকে ছাপিয়ে নাও যেতে পারে। অতিবৃষ্টির প্রভাবও পূর্বের মতো হবে কি না সংশয় থাকছে। কারণ সেবার বর্ষার মধ্যে অতিবৃষ্টিতে বিপর্যয় ঘটেছিল। এমনিতেই নদীগুলি ছিল বৃষ্টির জলে টইটম্বুর। তারপর প্রবল বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়। এবার বর্ষা বিদায়ের পর এই বৃষ্টির প্রভাব অতটা নাও হতে পারে। তবে সবটাই নির্ভর করছে শেষমেশ শনিবার দুপুর পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে কতটা বৃষ্টি হয় তার উপর। নিম্নচাপের দরুন শিলিগুড়ি, কোচবিহার ও উত্তর দিনাজপুরেও বৃষ্টি হয়েছে। আজ শনিবার দক্ষিণবঙ্গেও বজ্রমেঘ থেকে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে।