• জল জীবন মিশন প্রকল্পের কেন্দ্রের টাকা বকেয়া, বিক্ষোভ ঠিকাদারদের
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: প্রবল জল সংকটের আশঙ্কা আসানসোল সহ পশ্চিম বর্ধমান জেলাজুড়ে। খনি অঞ্চল হওয়ায় ভূগর্ভস্থ জল প্রায় পাওয়া যায় না। পানীয় জলের জন্য ভরসা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের জল প্রকল্পগুলিই। সেই জল প্রকল্পগুলির অপারেশন ও মেনটেনেন্সের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদাররা টাকা না পেয়ে প্রবল বিক্ষোভ দেখালেন আসানসোলে। শুক্রবার তাঁরা আসানসোলের সেনর‌্যালে রাস্তার উপর থাকা জনস্বাস্থ্য কারিগরি ভবনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকা বকেয়া। জল জীবন মিশনে কাজ করে কোনও টাকা পাওয়া যায়নি। টাকা না পেলে নভেম্বর মাসের শুরু থেকে ঠিকা শ্রমিকদের বেতন দেওয়া যাবে না। ঠিকা শ্রমিকরা কাজ না করলে মুখ থুবড়ে পড়ছে সরকারি জল প্রকল্পগুলি। যা নিয়ে উদ্বেগে প্রশাসনিক মহলও। 

    দপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সঞ্জীবকুমার মণ্ডল বলেন, টাকা না পাওয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ জল না থাকায় আমাদেরই সর্বত্র জল দিতে হয়। জল জীবন মিশনে কেন্দ্র দীর্ঘদিন টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ঠিকাদারদের পেমেন্ট করতে পারিনি। অপারেশন ও মেনটেনেন্সের টাকারও এপ্রিল মাস থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। টাকা না পেলে, ঠিকা শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দিলে সমস্যা বাড়বে। 

    তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন দাসু বলেন, বিজেপি বাংলায় অশান্তি পাকাতে চায়। মানুষের পানীয় জলের টাকাও কেন্দ্র আটকে দিয়েছে। বিজেপির এই প্রতিহিংসার রাজনীতির মানুষ জবাব দেবে। 

    বিজেপি জেলা সহ সভাপতি প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, জল জীবন মিশনের কাজ সময় মতো অন্য রাজ্য শেষ করতে পারলেও আমাদের রাজ্য পারল না কেন। আসলে ঠিকাদার হিসেবে রয়েছে নেতার আত্মীয়রা, কাজ হবে কী করে। হিসাব দেয়নি সময় মতো, তাই টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাজ্য কেন পুরনো প্রকল্পগুলির মেনটেনেন্সে ও অপারেশনের জন্য টাকা দিতে পারছে না। তার উত্তর তৃণমূল দিক। 

    দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জল জীবন মিশনের কাজ করার জন্য ঠিকাদারদের প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। 

    কেন্দ্র টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় আর টাকা আসছে না। স্বাভাবিক ভাবেই এই বিপুল আর্থিক বোঝা মাথায় নিয়ে ঠিকাদাররা আর নতুন কাজ করতে চাইছে না। কাজের গতি থমকে যাচ্ছে। এরপর অন্যান্য খাতে যেমন নির্বাচন প্রকল্পগুলি রক্ষণাবেক্ষণের টাকাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যার ফলে দফায় দফায় জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তরের অফিসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে ঠিকাদাররা। আন্দোলনকারী ঠিকাদার দেবনাথ সিং বলেন, টাকা না পেলে আমরা নভেম্বর মাস থেকে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারব না। অনেক ঠিকাদার স্ত্রীর গয়না বন্ধক রেখে শ্রমিকদের টাকা দিয়েছে। ঠিকাদারদের পুঁজি শেষ।-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)