• বাবা-মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায়, সোনালিদের পুশব্যাক কেন? সরব তৃণমূল সাংসদ
    বর্তমান | ০১ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেই তিনি ভারতীয় নাগরিক। তাহলে ওই সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা ভোদু শেখ ও জ্যোৎস্না বিবি কে? কেন তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হল? সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে ফের সরব হয়েছেন রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল সাংসদ সামিরুল ইসলাম। এবার তিনি সরাসরি নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, নির্বাচন কমিশনই বলেছে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় কারও নাম বা তাঁদের পিতামাতার নাম থাকলে কোনও সমস্যা নেই। নিশ্চিত করবে তাঁরা ভারতীয় নাগরিক। ভোদু শেখ ও জ্যোৎস্না বিবির নাম ওই সালের ভোটার তালিকায় রয়েছে। তাঁরা হলেন বাংলা বিরোধী জমিদারদের দ্বারা বাংলাদেশে পুশব্যাক করা অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুনের বাবা ও মা। তাহলে কেন সোনালি ও তাঁর পরিবারকে পুশব্যাক করা হল? একজন বৈধ ভারতীয় নাগরিকের মেয়ের প্রতি এই অবিচারের কী জবাব দেবে  নির্বাচন কমিশন? তিনি হুংকার দিয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আইনি লড়াই চালিয়ে যাব। এরাজ্যের একজন প্রকৃত ভোটারকে অপসারণ করতে দেব না। 

    উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন দিল্লি পুলিশ বীরভূমের দুই পরিবারের ছয় সদস্যকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশব্যাক করে বলে অভিযোগ। পাইকরের বাসিন্দা দানিশ শেখ, তাঁর গর্ভবতী স্ত্রী সোনালি বিবি ও তাঁদের পাঁচ বছরের সাবির শেখ এবং মুরারইয়ের ধীতোরা গ্রামের সুইটি বিবি ও তাঁর দুই নাবালক সন্তানকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়। দানিশ ও সুইটি বিবি দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির ২৬ সেক্টর রোহিনী বাঙালি বস্তিতে থেকে ভাঙাচোরা কেনাবেচার কাজ করতেন। অভিযোগ, ভারতীয় নাগরিক হিসেবে তাঁদের আধার, ভোটারকার্ড এবং তাঁর বাবা ও দিদিমার সমস্ত ডকুমেন্ট দেখানো হয়। কিন্তু, তারপরেও রেহাই মেলেনি। বাংলায় কথা বলায় তাঁদের জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেয় দিল্লি পুলিশ। পরিবারের দাবি, দিল্লির সিভিল অথরিটির রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের একটি কাগজ তাঁরা হাতে পান। তাতে এই ছ’জনকে বাংলাদেশের দেবুসর্পার পোস্টঅফিসের অধীনে মোরালগাংছেপুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপরই দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন রাজ্য সরকার ও পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ।  গত ৮ জুলাই হাইকোর্টে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন সোনালির বাবা ভোদু শেখ এবং সুইটির শাশুড়ি নাজেরা বিবি। গত ২৬ সেপ্টেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাঠানো ছ’জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরই মধ্যে ২২ আগস্ট বাংলাদেশে এই ছ’জনের বিরুদ্ধে কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্টের ধারায় মামলা হয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টও জানিয়ে দেয়, তারা প্রত্যেকে ভারতীয়। বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশনের কাছে রায়ের কপি পাঠিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু, সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তিনি বলেন, ২০০২ সালের মুরারই বিধানসভার ভোটার তালিকায় ১৪৮ অংশের ৫০৮ ও ৫০৯ ক্রমিক নম্বরে সোনালি বিবির বাবা ও মায়ের নাম রয়েছে। ফলে সোনালিরা নিশ্চিতভাবে ভারতীয় নাগরিক। তাঁরা যাতে নিজেদের দেশে ফিরে আসতে পারে সেই জন্য আইনি লড়াই জারি থাকবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)