নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভোটার তালিকার স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) নিয়ে শুরু হওয়া বিতর্ক ফের পৌঁছে গেল আইনের দরজায়। আদালতের নজরদারিতে সম্পন্ন হোক বাংলার এসআইআর প্রক্রিয়া, এই দাবিতে শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাসের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এক মামলাকারী। তাঁর দাবি—ভোটের মুখে তড়িঘড়ি কেন এসআইআর? জানানো হোক আদালতকে। আর হাইকোর্টের নজরদারিতে হোক গোটা প্রক্রিয়া। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ভিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়েরের অনুমতি দিয়েছে। আগামী সপ্তাহে মামলার শুনানির সম্ভাবনা বলে জানা গিয়েছে।
এই আবর্তেই এবার বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ১৯৮ বুথের ৩৩ জন ভোটারের নাম ‘উধাও’ হওয়া নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়েছে। ২০০২’এর ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল বলে দাবি করেছেন বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নতুন ওয়েবসাইট প্রকাশ করে তাতে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সংযোজন করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকাতেও নেই অশোকনগর বিধানসভার গুমা-১ নম্বর পঞ্চায়েতের ৬১ নম্বর বুথের ৭১ জন ভোটারের নাম। এই পর্বে নতুন করে বিতর্ক উসকেছে বাংলাদেশি সন্দেহে পুশব্যাক হওয়া বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা দানিশ শেখ ও তাঁর আসন্ন প্রসবা স্ত্রী সোনালি বিবিকে ঘিরে। দিল্লির ইটভাটার শ্রমিক সোনালিকে তাঁর স্বামী-সন্তান সহ অসমের ধুবড়ি দিয়ে বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে পাঠিয়েছিল বিএসএফ। যাঁকে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী হিসেবে পুশব্যাক করা হয়েছে, সেই সোনালি বিবির বাবা ও মায়ের নাম জ্বলজ্বল করছে ২০০২ সালের প্রামাণ্য ভোটার তালিকায়। মুরারই বিধানসভার ১৪৮ নম্বর পার্টের যথাক্রমে ৫০৮ ও ৫০৯ ক্রমিকে রয়েছে সোনালির বাবা ও মায়ের নাম। রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সাংসদ সামিরুল ইসলামের কথায়—প্রকৃত ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি সাজিয়ে এভাবেই এসআইআর করতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নথিতেই কেন্দ্রের দ্বিচারিতা প্রকাশ পেয়েছে। ভারতীয় নাগরিক সোনালিকে দেশে ফেরাতে আইনি লড়াই জারি থাকবে।
এদিকে এদিন হাইকোর্টের কাছে এসআইআর সংক্রান্ত একাধিক আবেদন জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তাঁর আর্জি, এসআইআরের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হোক। কেন এসআইআর হচ্ছে? তার প্রয়োজনই বা কী, এসব বিস্তারিতভাবে আদালতকে জানাক জাতীয় নির্বাচন কমিশন। একইসঙ্গে আবেদনে বলা হয়েছে, ২০০২’এর সম্পূর্ণ ভোটার তালিকা প্রকাশ করুক কমিশন। অপরদিকে বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের টেংরা পঞ্চায়েতের ২৯২ পার্টের বিএলও হিসেবে বাছাই হওয়া শিক্ষক রতন শিকদার এবং তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যের নাম ২০০২’এর ভোটার তালিকায় নেই। বিষয়টি নিয়ে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। রতনবাবুর কথায়, ‘বাবা-মা ১৯৮০’তে বাংলাদেশ থেকে আসেন। তখনও আমি জন্মাইনি। তাই নাম ওঠেনি। বাবা নিখোঁজ, মায়ের নাম কেন ওঠেনি, বলতে পারব না।’নতুন পোর্টাল
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নয়া ওয়েবসাইট চালু করল পশ্চিমবঙ্গ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর (সিইও)। এই সাইটেই মিলবে ২০০২ সালের পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা। ২৭ অক্টোবর, সোমবার রাজ্যে এসআইআর ঘোষণা হয়েছিল। তার পরের দিন থেকেই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে সিইও দপ্তরের ওয়েবসাইট। ভোটার তালিকা দেখতে গিয়ে বহু মানুষ নাকাল হন। তাই নয়া সাইট https://ceowestbengal.wb.gov.in/ চালু করল তারা।