নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এ যেন পুরোমাত্রায় ভোটযুদ্ধের প্রস্তুতি! বাংলার আপামর মানুষের পাশে থেকে সাংগঠনিক তোড়জোড় তৃণমূলের। একটি সাংগঠনিক কাঠামোতে রাজ্যের ৮১ হাজার বুথের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ। কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ পর্যন্ত ভোটারদের পাশে থাকতে ৬২০০ ক্যাম্প এবং ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ওয়ার রুম গঠন। যা ঘোষণা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, বুথ লেভেল অফিসারের (বিএলও) পাশে ছায়াসঙ্গীর মতো থেকে কাজ করতে হবে তৃণমূলের বুথ লেভেল এজেন্ট-২ (বিএলএ-২)দের। এক মুহূর্তের জন্য বিএলওদের ছাড়া যাবে না।
শুক্রবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বৈঠক করেন প্রায় ১৮ হাজার দলীয় পদাধিকারী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে। বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো সাংগঠনিক একাধিক বিষয় ঘোষণা করেছেন অভিষেক। দলীয় পদাধিকারীদের প্রতি অভিষেকের স্পষ্ট বার্তা, ১০০ শতাংশ ইনিউমারেশন ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। বাংলার কোনও ভোটার যেন বাদ না যান। তারজন্য সর্বতোভাবে সাহায্য করবে তৃণমূল। পরিযায়ী শ্রমিক ও বিদেশে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের পরিবারের লোকেরা এই ইনিউমারেশন ফর্ম ফিলাপ করে দেবেন।
তৃণমূল কীভাবে বাংলার মানুষদের সহযোগিতা করবে, তার একটি ছক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। অভিষেক ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের ৩৩৪৫ গ্রাম পঞ্চায়েত ও ২৮৬১টি পুরসভার ওয়ার্ডে ক্যাম্প বা শিবির হবে। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ৬২০০। ৪ নভেম্বর থেকে এই ক্যাম্প শুরু হবে। চলবে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ না-হওয়া পর্যন্ত। দলের সুসজ্জিত এই শিবিরগুলিতে থাকবে কম্পিউটার, প্রিন্টার ও ভোটার তালিকা। যেখান থেকে সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করবেন তৃণমূল কর্মীরা। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই শিবির চলবে। এছাড়া রাজ্যের প্রত্যেকটি বিধানসভায় ১৫ জনকে নিয়ে একটি ওয়ার রুম তৈরি করতে হবে। যেখান থেকেও সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করা হবে।
আগামী দিনে অভিষেক নিজে জেলা সফরে যাবেন এবং রাস্তায় থেকে মানুষকে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন। ভোটারদের ফর্ম ফিলাপের কাজ কেমন হচ্ছে, তা দেখার জন্য দলীয়ভাবে ‘দিদির দূত’ অ্যাপকে ব্যবহার করছে তৃণমূল। যেখানে দলের কর্মীরা ভোটারদের তথ্য দেবেন। অ্যাপে কোনও সমস্যা হলে ৮১৪২৬৮১৪২৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তার আগে আগামী তিনদিন বিএলএ-২দের নিয়ে বৈঠক করবেন বিধায়করা। শিবিরগুলিতে গিয়ে বিধায়ক, সাংসদ, জেলা পরিষদের সদস্য, জেলা কমিটির সদস্যদের একযোগে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিষেকের কথায়, আগামী ছয়মাস দলের জন্য পরিশ্রম করতে হবে। যুদ্ধের সৈনিক হয়ে স্বনির্ভর বাংলা গড়তে হবে, যাতে বিজেপিকে আগামী দিনে খুঁজেই পাওয়া না যায়।