ভুটানের জলে শিসামারা নদীর নির্মীয়মাণ বাঁধ ভেঙে ফের শালকুমার ১ ও শালকুমার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়। প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষ ওই এলাকার বাড়ি ঘর ছেড়ে স্থানীয় লাল্টুরাম হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে তাদের থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। শালকুমার ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষ রায় বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে যেখানে শিসামারা নদীর বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল তা ভেঙে শালকুমারের নতুন পাড়া ও মুন্সিপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকে গিয়েছে। ২০০ থেকে ২৫০ পরিবারকে আমরা উদ্ধার করে স্থানীয় নতুন পাড়া লাল্টুরাম হাইস্কুলে নিয়ে এসেছি। বাড়ির গবাদি পশু ও অন্যান্য কিছু উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। আরও জল বাড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠবে।”
শালকুমারে বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের নামানো হয়েছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে জেলা পরিষদও। নিচু এলাকা থেকে মানুষদের সরিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং শুরু হয়েছে। বলে রাখা ভালো, এর আগে গত ৫ অক্টোবরের বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল আলিপুরদুয়ার ১ ব্লকের শালকুমার ১ ও শালকুমার ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। তার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের ওই এলাকা আবার ক্ষতির মুখে। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। এদিকে, বীরপাড়ার ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়েতে বীরপাড়া গেরগান্ডা ব্রিজের অ্যাপ্রোচ রোডেও ধস নেমেছে। ফলে উত্তর-পূর্ব ভারত ও ভুটান থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার পথে যানচলাচলে ব্যাপক সমস্যা দেখা দিয়েছে।
বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জলপাইগুড়ি। এখনও পর্যন্ত ১৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তার ফলে ফুঁসছে নদী। ইতিমধ্যে তিস্তা ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিস্তাপাড়ের বাসিন্দা। তবে সেচদপ্তরের কর্মীরা সারাক্ষণ পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে। জলপাইগুড়ির পাশাপাশি শৈলশহর দার্জিলিংয়েও চলছে বৃষ্টি। শনিবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় মুখ ঢেকেছে পার্বত্য এলাকা। দৃশ্যমানতা খুবই কম। রবিবারও আবহাওয়ার বিশেষ উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
এদিকে, হাওয়া অফিসের তরফে এখনও আবহাওয়া বদলের কোনও সুখবর দিতে পারনি। আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, শনিবার জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা। সঙ্গে ৩০-৪০ কিলোমিটার বেগে বইতে পারে দমকা ঝোড়ো হাওয়া। রবিবারও উত্তরবঙ্গে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। সোমবার থেকে আবহাওয়া বদলের সম্ভাবনা।