• বঙ্গের শিল্প-ছবি তুলে ধরতে কনক্লেভ, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বিনিয়োগকারীদের সমাবেশ
    প্রতিদিন | ০১ নভেম্বর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: রাজ্যে পালাবদলের পর পালটে গিয়েছে শিল্পের পরিবেশ। গত চোদ্দো বছর ধরে এ রাজ্যে ক্রমাগত বিনিয়োগ করেছে দেশি-বিদেশি শিল্প সংস্থাগুলি। লগ্নির হাত ধরে খুলে গিয়েছে কর্মসংস্থানের পথও। রাজ্যে শিল্প সাফল্যের সেই সব বাস্তব কাহিনিই শোনাবে এবারের শিল্প কনক্লেভ। যাঁরা লগ্নি করেছেন, যাঁরা শিল্প গড়েছেন, যাঁরা কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন, তাঁরাই শোনাবেন তাঁদের শিল্প-যাত্রার অভিজ্ঞতার কথা। শুধু যা হয়ে গিয়েছে তা নয়, এই সাফল্যের ভবিষ্যতের রূপরেখাও তুলে আনবেন শিল্পমহলের তাবড় ব্যক্তিত্বরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিল্পজগতে এমন অভিনব ‘বিজনেস ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৮ ডিসেম্বর।

    শুক্রবার নবান্নে শিল্প সংক্রান্ত সিনার্জি বৈঠকের পরই এই কনক্লেভের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রীর ও অর্থ দপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল চিফ অ্যাডভাইজার ও প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তিনি জানিয়েছেন, ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে এই কনক্লেভের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
    আসবেন তাবড় শিল্পপতি ও লগ্নিকারীরা। তাঁরাই জনসমক্ষে তুলে ধরবেন রাজ্যে শিল্পের প্রকৃত অগ্রগতির ছবি। অমিত মিত্রর কথায়, “যাঁরা সাফল্য পেয়েছেন, তাঁদের মুখেই শুনব কত বিনিয়োগ এসেছে, কত কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থাৎ, সাফল্যের বিবরণ এবং উদাহরণ এই কনক্লেভেই আমরা পাব। শুনব নয়া কী প্রকল্প হবে, কত বিনিয়োগ আসবে, শিল্প মহলের পরিকল্পনা ও লক্ষ্য কী, জানব।” একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “সাফল্যেকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, তাও শুনব আমরা। সাফল্য ও ভবিষ্যতের সাফল্যের রূপরেখা উঠে আসবে এই কনক্লেভে।”

    বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের পরে স্টেট লেভেল ইনভেস্টমেন্ট সিনার্জি কমিটির সঙ্গে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র গুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে যাবতীয় সমস্যার জট কাটিয়ে শিল্পের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে। তখনই ঘোষণা হয় পুজোর পরই হবে ‘বিজনেস ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। নবান্ন সূত্রে খবর, ইস্পাত, জেমস ও জুয়েলারি, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ফিনটেক ও সেমিকন্ডাক্টর, খাদ্য সংক্রান্ত শিল্প, পর্যটন, টেক্সটাইল, চামড়া ও চামড়াজাত সামগ্রী এবং ওষুধ, চিকিৎসা সংক্রান্ত শিল্পক্ষেত্রকে ‘ফোকাস’ হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এদিন অমিত মিত্রের ব্যাখ্যা, উন্নয়নমুখী বৃদ্ধিকেন্দ্রিক শিল্প, কর্মসংস্থানমূলক, রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে এমন শিল্পক্ষেত্র, রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদ যেমন পাট, সিল্ক, পর্যটনের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা শিল্প, রাজস্ব আদায়কারী শিল্পের মতো ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে এই কনক্লেভে।

    তবে একইসঙ্গে অমিত মিত্র জানান, “কনক্লেভ ও সামিটের মধ্যে অনেক তফাত আছে। সামিটে দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিরা ছিলেন। ৫০০-র বেশি ডেলিগেট ছিলেন। এটা হচ্ছে একটা প্র্যাকটিক্যাল কনক্লেভ। কীভাবে তাঁরা বিনিয়োগ এনেছেন, কীভাবে তাঁরা তার সঙ্গে কর্মসংস্থান এনেছেন, কীভাবে রপ্তানি করছেন, তা তুলে ধরবেন।” তাঁর আরও সংযোজন, “তাঁরা কত বিনিয়োগ করেছেন, তা উঠে আসবে। আসছে দিনে যে প্রোজেক্টে তাঁরা যাচ্ছেন, সে সম্পর্কে আলোচনা হবে বা নতুন যাঁরা আসছেন তাঁদের সঙ্গেও বিনিয়োগের সংযোগ তো থাকতেই হবে।” এদিন সিনার্জি বৈঠকে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের সচিবরা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)