বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার হাতে প্রতারিত আমানতকারীদের টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়ায় কেন তাঁদেরই গচ্ছিত টাকা খরচ করা হবে, প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার রোজ় ভ্যালি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, যদি ‘অ্যাসেট ডিসপোজ়াল কমিটি (এডিসি)-র টাকা ফেরতের বিষয়ে নিযুক্ত রাজ্যের সংস্থা ওয়েবেলের খরচ রাজ্য বহন করে থাকে তা হলে কেন্দ্রীয় সংস্থাকে নিয়োগের ও পরিচালনার খরচ কেন্দ্র বহন করুক কেন্দ্র। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ওয়েবেলের বদলে অন্য সংস্থা নিয়োগের ক্ষেত্রে রিপোর্ট দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানাবে এডিসি। এডিসি-র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের ফরেন্সিক অডিটের দায়িত্ব নিতে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) ইচ্ছুক কি না, সেই বিষয়ে কেন্দ্রের থেকে তথ্য তলব করেছে আদালত। পরের শুনানি ১১ নভেম্বর।
এ দিন আদালতের নির্দেশে থাকা ‘ফরেন্সিক অডিট’ শব্দবন্ধ পরিবর্তনের আর্জি জানান এডিসি-র আইনজীবী। তাঁর বক্তব্য, কমিটিতে প্রাক্তন বিচারপতি, ইডি, সিবিআই, সেবি-র অফিসারেরা যুক্ত আছেন। ‘ফরেন্সিক’ শব্দটি ব্যবহারের ফলে কমিটির উপর প্রশ্ন উঠছে, মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে। শুধু ‘অডিট’ কথাটি ব্যবহারের আবেদন করেন তিনি। আর্জি খারিজ করে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের পর্যবেক্ষণ, আদালত সচেতন ভাবে এই শব্দটি ব্যবহার করেছে।
এ দিন রাজ্যের সংস্থা ওয়েবেলের ধীর গতিতে কাজ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইডি-র কৌঁসুলি। তাঁর দাবি, ওয়েবেলের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘স্টকহোল্ডিং ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড’-কে নিয়োগের নির্দেশ দিক কোর্ট। এরা অর্থলগ্নি সংস্থা সাহারার আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ক্ষেত্রে উন্নত পরিকাঠামো এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে। আগে কোর্টে এসে টাকা ফেরাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বিশেষজ্ঞ সংস্থার সাহায্য প্রয়োজন বলে এডিসি-র চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিচারপতি দিলীপকুমার শেঠও দাবি করেছিলেন। এই সংস্থাকে নিয়োগ করলে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ হবে জানিয়েছে এডিসি। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ক্ষতিগ্রস্তদের প্রাপ্য টাকা দিয়ে কী ভাবে এই খরচ বহন করা সম্ভব? বিচারপতি ভরদ্বাজ বলেন, “অন্য অর্থলগ্নি সংস্থার ক্ষেত্রে দ্রুত টাকা ফেরানোর কাজ করছে ওয়েবেল। এ ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগ উঠছে। ইডি ওয়েবেলকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করছে কি না, তা দেখা দরকার।”