রিভলভার দেখিয়ে রাস্তায় লুট তিন কোটি টাকার সোনা, দাবি কারিগরের
আনন্দবাজার | ০১ নভেম্বর ২০২৫
রিভলভার দেখিয়ে এক সোনার গয়নার কারিগরের কাছ থেকে দু’কেজিরও বেশি সোনা লুট করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যক্তির দাবি, স্কুটারের সিটের নীচে প্রায় তিন কোটি টাকার সোনা নিয়ে গয়নার কারখানায় যাচ্ছিলেন তিনি। দুষ্কৃতীরা সেই স্কুটার নিয়েই চম্পট দেয় বলে তাঁর অভিযোগ। বুধবার রাতে সিঁথি থানা এলাকার রাজা অপূর্বকৃষ্ণ লেনে ওই কারখানার সামনেই ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি অভিযোগকারী কারিগর সঞ্জিতকুমার দাসের। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে সিঁথি থানার পুলিশ।
৫৪ বছরের সঞ্জিতের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে। তিনি রাজা অপূর্বকৃষ্ণ লেনের ওই কারখানার কর্মী। সেখানে কাজ করেন ১৫-২০ জন। তৈরি করা হয় সোনার হার। একটি তেতলা বাড়ির একতলায় রয়েছে গয়না তৈরির ওই কারখানা। উপরের দু’টি তলায় কর্মীদের থাকা-খাওয়ার জায়গা রয়েছে। তাঁরা জানান, কারখানার মালিক থাকেন ভবানীপুরে।
শুক্রবার ওই কারখানার সামনে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ডাকাতির ঘটনার কথা বলছিলেন সঞ্জিত। তিনি জানান, বুধবার রাতে বড়বাজার থেকে প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের দু’কেজি ৩৮০ গ্রাম সোনা কিনে স্কুটারে করে ফিরছিলেন। সোনা রাখা ছিল স্কুটারের সিটের তলায়। রাত ৮টা ১০ নাগাদ কারখানার গলিতে ঢোকার মুখে তিনি দেখেন, দু’জন দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাদের মুখে ছিল মাস্ক এবং মাথায় টুপি। এক জনের পরনে ছিল সাদা ফুলহাতা জামা এবং প্যান্ট। অন্য জন পরে ছিল নীল গেঞ্জি এবং নীল জিন্স। সঞ্জিত বলেন, ‘‘আমি ওদের পাশ দিয়ে গিয়ে কারখানার গেটের সামনে স্কুটার থামাই। তার পরে নেমে কারখানার দরজা খুলতে যাই। সেই সময়ে ওই দু’জন এগিয়ে আসে। সাদা জামা পরা লোকটি আমার দিকে রিভলভার তাক করে। আমি ভয়ে চিৎকার শুরু করি। এর পরেই সে আমার স্কুটারে বসে পড়ে। তার পরে সেটি নিয়ে চলে যায়। নীল গেঞ্জি পরা ব্যক্তি হাঁটতে হাঁটতে গলির অন্য দিক দিয়ে চলে যায়।’’
সঞ্জিতের আরও দাবি, ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে তিনি কারখানার অন্য একটি মোটরবাইক নিয়ে নীল গেঞ্জি পরা ব্যক্তির পিছনে যান। কিন্তু ওই দুষ্কৃতীকে আর দেখতে পাননি। সঞ্জিতের চিৎকার শুনে কারখানার কর্মীরা এবং এলাকার লোকজন ছুটে আসেন। কিন্তু তত ক্ষণে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। কারখানার এক কর্মী গুরুপ্রসাদ জানা বলেন, ‘‘আমি তখন ছাদে ছিলাম। সঞ্জিতের চিৎকার শুনে ছুটে নামার আগেই ডাকাতি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। পুরো ঘটনাটি ঘটে তিন থেকে চার মিনিটের মধ্যে।’’
এর পরেই কর্মীরা খবর দেন কারখানার মালিককে। রাতেই সিঁথি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তদন্তে সব দিক খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। এই ঘটনায় আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় মানুষজন। এলাকার বাসিন্দা ইন্দ্রনীল সরকার বললেন, ‘‘৫৬ বছর এখানে রয়েছি। এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। খুবই আতঙ্কে আছি।’’