• এসআইআর নিয়ে শুরু হয়েছে বিএলওদের প্রশিক্ষণ, চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০১ নভেম্বর ২০২৫
  • এসআইআর নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রশিক্ষণ। কীভাবে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের কাজ করতে হবে রাজ্যজুড়ে চলছে তার প্রশিক্ষণ। কীভাবে এসআইআর প্রক্রিয়ার কাজ করতে তা শেখানো হচ্ছে বিএলওদের। বাড়ি বাড়ি এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে যাওয়ার কথা বিএলওদের। এরপর তথ্য নির্দিষ্ট অ্যাপে আপলোড করবেন তাঁরা। গত ২৮ অক্টোবর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিএলওদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। চলবে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত। কলকাতায় একাধিক শিবিরে বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

    শনিবার কলকাতার দু’টি জায়গায় প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। কলেজ স্ট্রিটের ডিরোজিও হলে ক্যাম্প খোলা হয়েছে। সেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দু’দফায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। চৌরঙ্গী, বেলেঘাটা এবং জোড়াসাঁকোয় সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রথম দফার প্রশিক্ষণ চলবে। এরপর এন্টালি, শ্যামপুকুর, কাশীপুর-বেলগাছিয়ায় দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত দ্বিতীয় দফায় বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া, জেসপ বিল্ডিংয়ের তিনতলার কনফারেন্স হলেও বিএলওদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে মানিকতলার বিএলওদের প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

    এ বছর মোট ৮০,৬৮১ জন বিএলও-কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রশিক্ষণে মূলত জোর দেওয়া হচ্ছে বিএলও অ্যাপ, তার প্রযুক্তিগত ব্যবহার, লগ-ইন পদ্ধতি এবং এনুমারেশন ফর্মের খুঁটিনাটি বোঝানোয়। বিএলও-দের হাতে তুলে দেওয়া হবে পরিচয়পত্র-সহ বিশেষ কিট ও ক্যাপ। ভবিষ্যতের বুথ র‌্যাশনালাইজেশনের কথা মাথায় রেখে আরও ১৪ হাজার বিএলও-র তালিকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

    বিএলও-দের নিরাপত্তা বিষয়টি নজরে রাখছে রাজ্য পুলিশ। এই বিষয়ে নজর রাখছেন রাজ্য পুলিশ নোডাল অফিসার এডিজি আনন্দ কুমার। নির্বাচন কমিশনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রায় ৮৫% এনুমারেশন ফর্ম ছাপা হয়ে গিয়েছে। বাকি মুদ্রণ প্রক্রিয়া ২ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ছাপা ফর্মগুলি ৩ নভেম্বরের মধ্যে বিএলওদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ৪ তারিখ থেকেই বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলির কাজ শুরু হয়ে যাবে।

    উল্লেখ্য, রাজ্যে এসআইআর-এর প্রশিক্ষণ অনেক আগেই শুরু হয়েছে। প্রথমে কমিশনের তরফে রাজ্য সিইও দফতরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখান থেকে জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁরা ইআরও বা ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসার এবং এইআরওদের বা অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেকশন রেজিস্ট্রেশন অফিসার প্রশিক্ষণ দেন। ইআরও এবং এইআরও-দের পৃথক ভাবে সিইও দফতরেও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর পর তাঁরা বিএলও সুপারভাইজারদের প্রশিক্ষণ দেন। বিএলও সুপারভাইজাররা বিএলওদের প্রশিক্ষণ দেবেন।

    রাজ্যে  মোট ৯০ হাজার বুথ রয়েছে। সেখানে বিএলও-দের সাহায্য নিয়ে বিএলএ ১, বিএলএ ২-রা কাজ করবেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী  প্রশিক্ষণের পর আগামী ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম দেবেন বিএলওরা। কেউ রাজ্যের বাইরে গেলে বা প্রবাসীরা অনলাইনেও ফর্ম ভরতে পারবেন। ৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা। এই তালিকা নিয়ে যদি কারও অভিযোগ থাকে তাহলে সে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে নিজেদের অভিযোগ জানাতে পারবে। ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে অভিযোগ শোনা এবং খতিয়ে দেখার কাজ। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।

    বিহারে শেষ হয়েছে এসআইআর প্রক্রিয়া। ৬ এবং ৯ নভেম্বর দু’দফায় সেখানে ভোট। গত সোমবার বাংলায় এসআইআর প্রক্রিয়ার কথা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ‘অবৈধ’ ভোটারদের বাদ দিতেই এসআইআর বলে দাবি করা হচ্ছে। বিহারে এসআইআর-এর ফলে ভোটার তালিকা থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গেছে বলে কমিশন সূত্রে খবর। এসআইআর নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল বিরোধিতা জানিয়েছে। এসআইআর আতঙ্কে মারা গেছেন কয়েকজন। ফলে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে বাংলায় শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

     
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)