• ৮২ কেমোর পরেও দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই, উচ্চ মাধ্যমিকে নবম ‘কর্কটজয়ী’ অদ্রিজা
    প্রতিদিন | ০১ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাকপুর: শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ ক্যানসার। কর্কটমুক্ত হতে ৮২ বার নিতে হয়েছে কেমো। দাঁতে দাঁত চেপে কঠোর লড়াইয়ের পরেও পড়াশোনা ছাড়েননি। চালিয়ে গিয়েছেন লড়াই। অবশেষে যেন ‘যুদ্ধ’ জয়। উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারে নবম উত্তর দমদম পুরসভার ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের উদয়পুর সাউথ এলাকার বাসিন্দা অদ্রিজা। তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা পরিবার।

    গত ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর। সেদিনই আসে প্রথম ধাক্কাটা। মাত্র ১২ বছর বয়সে টি-সেল লিম্ফোমা নামের এক ধরনের জটিল ক্যানসারে আক্রান্ত হন অদ্রিজা। তারপর থেকে শুরু হয় কঠোর লড়াই। পরিবারের সদস্যরা তাঁকে মুম্বই নিয়ে যান। সেখানে টানা আট মাস থেকে মরণপন লড়াই। বাড়ি ফিরেও চলে লড়াই। ২০২১ সালের ১৮ জুন তাঁর কেমোথেরাপি সম্পূর্ণ হয়। মোট ৮২টি কেমো নিতে হয় অদ্রিজাকে। শারীরিক কষ্ট সত্ত্বেও পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। যদিও চিকিৎসার জন্য স্কুল যেতে না পারায় সপ্তম শ্রেণিতে এক বছর থেকে যেতে হয়েছিল তাঁকে। ক্যানসার জয় হলেও অদ্রিজায় নিয়মিত চিকিৎসায় থাকতে হয়। রাত জেগে পড়াও নিষেধ। তবে সমস্ত বাধাকে তুচ্ছ প্রমাণ করে এগিয়ে গিয়েছেন ছাত্রী। 

    সেই অদ্রিজা মাধ্যমিক পাশের পর নিবেদিতা বালিকা বিদ্যালয়ে কলাবিভাগে পড়াশোনা শুরু করে। উচ্চমাধ্যমিকের তৃতীয় সেমেস্টারের ফলাফল সকলকে চমকে দিয়েছেন। মোট ১৯০ নম্বরের পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১৮৫। বাংলায় ৪০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৩৯, ইংরেজিতে ফুলমার্কস। ৪০ পেয়েছেন। অর্থনীতিতে ৩৮ নম্বর, ভূগোলে ৩৫ এর মধ্যে ৩৪ নম্বর ও সাইকোলজিতে পঁয়ত্রিশের মধ্যে ৩৪ পেয়েছে। অদ্রিজা বলেন, “মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষিকাদের সহযোগিতা ও আশীর্বাদ ছাড়া এই ফলাফল সম্ভব হত না।” আগামী দিনে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি নিয়ে এগোতে চান অদ্রিজা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)