হুগলির চাঁপদানির অ্যাঙ্গাস এলাকায় একই পরিবারের তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। শনিবার সকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বাবা, মা ও আট বছরের মেয়ের নিথর দেহ। মৃতরা হলেন মহম্মদ কয়ামুদ্দিন (৪০), তাঁর স্ত্রী মমতাজ পারভিন (৩২) এবং তাদের কন্যা আফসা (৮)।
প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী ও মেয়েকে বিষ খাইয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন কয়ামুদ্দিন। বাড়ির ঘর থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে কোন পরিস্থিতিতে এই ভয়াবহ সিদ্ধান্ত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তিন দেহকেই ময়নাতদন্তের জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, কয়ামুদ্দিন ব্যারাকপুর আদালতে একজন মুহুরির কাছে কাজ করতেন। তিনি বাজারে বেশ কিছু টাকা ধারদেনায় জড়িয়ে পড়েছিলেন। সেই চাপে পড়ে বাবাকে জমি বিক্রি করার কথা বলেন। কিন্তু চন্দননগরে বসবাসকারী বাবা-মা, যাঁরা দু’জনেই অসুস্থ— তাঁরা জমি বিক্রি করতে রাজি হননি। তাঁদের ধারণা, জমি বিক্রি হয়ে গেলে ভবিষ্যতে জীবনের ভরসা থাকবে না।
এই পারিবারিক চাপ ও টানাপড়েনের মধ্যেই শনিবার সকালে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। প্রতিবেশীরা জানান, সকালবেলা দরজা না খোলায় প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। পরে দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই দেখা যায় তিন জনেরই মৃত্যু হয়েছে।
চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার অলকনন্দা ভাওয়াল জানান, ‘পারিবারিক কোনও অসন্তোষ বা চাপ থেকেই এই ঘটনা কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সব ধরনের সম্ভাবনাই খোলা রেখে তদন্ত প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে।’
পুলিশ এখন উদ্ধার করা সুইসাইড নোট, আর্থিক লেনদেন, জমি-সংক্রান্ত বিবাদ ও পারিবারিক সংঘাত— সব কিছুই খতিয়ে দেখছে। এই ঘটনায় এলাকায় গভীর নিস্তব্ধতা ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে।