উত্তরবঙ্গের বানভাসি মানুষের ত্রাণ বণ্টন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে বিডিওর সঙ্গে বচসা। আর সেই বচসাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন মনোজ টিগ্গা। মাদারিহাটের বিডিও অমিত চৌরাশিয়ার দপ্তরে আঙুল উঁচিয়ে, টেবিল চাপড়ে, উত্তেজিত ভাষায় প্রশ্নবানে বিডিওকে একহাত নিলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ। সেই ঘটনার ভিডিও এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। আর তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন এই বিজেপি নেতা।
প্রসঙ্গত, পূজোর পরপরই হড়পা বানে বিপর্যস্ত হয়েছে উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। চা বাগানের বহু শ্রমিক পরিবার এখনও ত্রাণসামগ্রী পাননি বলে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁদেরকে একটি ত্রিপলও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। সেই অভিযোগ নিয়েই গত ২৯ অক্টোবর বিডিও দপ্তরে যান সাংসদ মনোজ টিগ্গা। ভাইরাল ভিডিও অনুযায়ী, দপ্তরে ঢোকার পর থেকেই বিডিওর প্রতি দুর্ব্যবহার শুরু করেন তিনি। কখনও আঙুল উঁচিয়ে, কখনও টেবিল চাপড়ে তোপ দাগেন বিডিওর দিকে। এমনকী, বিডিওকে তৃণমূলের ‘ঝান্ডাধারী’ বলেও আক্রমণ করেন সাংসদ।
তবে বিজেপি সাংসদের এই আচরণে বিডিও অমিত চৌরাশিয়া একটুও মেজাজ না হারিয়ে শান্তভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, তাঁরা কাজ করছেন এবং ত্রাণ বণ্টন সংক্রান্ত সব তথ্য নিয়মমাফিক ঊর্ধ্বতন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এভাবে বেশ কিছুক্ষণ বাকবিতণ্ডার পর দপ্তর থেকে বেরিয়ে যান সাংসদ।
ঘটনার পর বিডিও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পুরো বিষয়টি জানান। তাঁর বক্তব্য, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে না জানিয়ে সাংসদ এসেছিলেন, ভিডিও রেকর্ড করে চলে গিয়েছেন। আমি কাজ করতে এসেছি, কারও সঙ্গে ঝগড়া করতে নয়।’
ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। প্রশ্ন, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি কীভাবে একজন সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারেন?
এ বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ প্রকাশচিক বরাইকের কটাক্ষ, ‘একজন ডব্লিউবিসিএস আধিকারিকের উপর নিজের ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। এটা অসাংবিধানিক কাজ। ওরা মানুষের পাশে থাকে না। প্লাবনে সাংসদ কী করেছেন? কী দিয়েছেন? কিছুই নয়। এরা শুধু নাটক করছে। এবার উত্তরবঙ্গে তৃণমূল জিতবে।’
অন্যদিকে, প্রশাসনিক মহলেও ঘটনার তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অন্যান্য বিরোধী দলগুলির দাবি— এটাই বিজেপির ‘আসল চরিত্র’।