• মুখরক্ষা করতেই কি দিল্লিতে কৃত্রিম বৃষ্টির অনুমতি বিজেপি সরকারের? উঠছে প্রশ্ন
    বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: দেশের রাজধানীর অসহনীয় বায়ুদূষণ নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে বিজেপি সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের উপর বাজি ধরেছিল দিল্লির রেখা গুপ্তা সরকার। কিন্তু ক্লাউড সিডিং করেও কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো সম্ভব হয়নি। ক্লাউড সিডিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন আইআইটি কানপুরের বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রাকৃতিক মেঘে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্দ্রতা না থাকলে যে এভাবে বৃষ্টি নামানো যাবে না, তা আগেই জানতেন তাঁরা। কিন্তু বিজেপি সরকারের কি সে কথা জানা ছিল না?নাকি কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানো সম্ভব নয় জেনেও শুধুমাত্র মুখরক্ষা করতেই কি ক্লাউড সিডিংয়ের নামে জনগণের ৩৪ কোটি টাকা অপচয় করেছে তারা? দিওয়ালির দু’সপ্তাহ পরেও রাজধানীর দূষণের মাত্র না কমায় অনেকেই এমন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। তাঁরা বলছেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে শুধুমাত্র চমক দিতে চেয়েছিল বিজেপি। তাতে যা হওয়ার ছিল, তাই হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বরে রাজ্যসভায় লিখিত প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক জানিয়েছিল, শীতকালে দিল্লিতে ক্লাউড সিডিংয়ের বিপক্ষেই মত দিয়েছে কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড এবং ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর। বিশেষজ্ঞরা স্পষ্টই জানিয়েছিলেন, পশ্চিমি ঝঞ্ঝার কারণে নভেম্বর থেকে ফেব্রুরারি পর্যন্ত দিল্লির আকাশে ঘন, আর্দ্র মেঘ (যাতে জলকণা বেশি থাকে) জমে না। সেই মেঘে সিডিং করলেও কৃত্রিম বৃষ্টি হওয়া সম্ভব নয়। ওই তিনটি সরকারি সংস্থা আরও জানিয়েছিল, পরিস্থিতি অনুকূল না থাকা সত্ত্বেও যদি বৃষ্টিপাতের জন্য বায়ুমণ্ডলে সিলভার আয়োডাইডের মতো রাসায়নিক ছড়ানো হয়, তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। কিন্তু তারপরেও আইআইটি কানপুরের সঙ্গে চুক্তি করে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের উদ্যোগ নেয় দিল্লি সরকার। এর জন্য বরাদ্দ হয় ৩৪ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী, ২৮ অক্টোবর কয়েক কোটি খরচ করে  ক্লাউড সিডিং করা হয়। তাতে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি ছাড়া দিল্লিবাসীর আর কিছুই জোটেনি।

    কিন্তু বিশেষজ্ঞরা আর্দ্র মেঘ না থাকার বিষয়টি দিল্লি সরকারকে জানানো সত্ত্বেও কে ক্লাউড সিডিংয়ের অনুমতি দিয়েছিলেন? কেন তিন সংস্থার মতামত শোনা হয়নি? এরপরেও কি মোটা টাকা খরচ করে ফের কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের চেষ্টা করা হবে? সেই সব প্রশ্নের উত্তর নেই। দিল্লির বিজেপি সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে, কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের বিষয়টি এখনও পরীক্ষা-নিরীক্ষার স্তরে রয়েছে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী বিষয়টি কোনও মন্তব্যই করতে চাইছেন না। আইআইটি কানপুরের আধিকারিকরা অবশ্য জানিয়েছেন, ক্লাউড সিডিংয়ের ফলাফল তাঁরা খতিয়ে দেখছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)