নিজস্ব প্রতিনিধি, পাটনা: বিহার নির্বাচনে কোটিপতি প্রার্থীদের ভিড়। সেই কোটিপতিদের ভিড়ে এমন প্রার্থীরাও রয়েছেন যাঁদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মত সঙ্গতিটুকুও নেই!
এবারের বিহার নির্বাচনে ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৩০৩ জন এমন প্রার্থী দাঁড়াচ্ছেন গড়ে যাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ গড়ে ৩.২৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সর্বসাকুল্যে প্রায় ১৩৪ কোটির কাছাকাছি। অন্যদিকে এমন প্রার্থীরাও রয়েছেন সবমিলিয়ে যাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ মাত্র ১ হাজার টাকা। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়ন পেশের জন্য প্রতি প্রার্থীকে দিতে হয় ১০ হাজার টাকা। তফসিলি জাতিভুক্ত প্রার্থীদের জন্য এর অর্ধেক অর্থাৎ পাঁচ হাজার টাকা। কিন্তু এই প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার মত সম্পত্তিটুকুও নেই।
এবারের নির্বাচনে দ্বারভাঙ্গা (শহর) বিধানসভা থেকে এসইউসিআই’এর টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন মুজাহিদ আলম। তিনি এবার বিহার বিধানসভা নির্বাচনের সবথেকে দরিদ্র প্রার্থী। মুজাহিদের দাখিল করা নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ সর্বসাকুল্যে হাজার টাকা। স্থাবর সম্পত্তি কিছু নেই। মুজাহিদবাবু শিক্ষিত। যুবক। অংকে স্নাতক। পেশায় গৃহশিক্ষক। তিনি শুধু নন, আরও একজন প্রার্থী রয়েছেন যাঁর সম্পত্তির পরিমাণও মাত্র হাজার টাকা। পাটনা শহরের বার বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পিপলস পার্টি অফ ইন্ডিয়ার টিকিটে প্রার্থী হয়েছেন শত্রুঘ্ন বর্মা। তাঁরও আছে মাত্র হাজার টাকার সম্পত্তি। এছাড়াও মুজফফরপুরের মিনাপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন শিবকুমার যাদব। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২ হাজার ২৩ টাকা। আরা বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এমএল)’র প্রার্থী কায়মুউদ্দিন আনসারির জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। দিনরাত এক করে প্রচার করে বেড়াচ্ছেন কায়মুদ্দিন। তিনি মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন তাতে দেখা গিয়েছে, তাঁর রয়েছে কুড়ি হাজার টাকা। আর ব্যাঙ্কে গচ্ছিত মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, ভারতীয় গণতন্ত্রের মাধুর্য এটাই, ধনী-দরিদ্র সকলেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে।
বিগত নির্বাচনের ফলাফল অনুযায়ী, বর্তমানে বিহারের ২৪৩টি আসনের মধ্যে ১৯৪টি আসনে জয়ী বিধায়করা কোটিপতি। গড়ে তাঁদের সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ১৩ লাখের কাছাকাছি। এসইউসিআই প্রার্থী মুজাহিদের কথায় ‘টাকা শেষ কথা নয়। সমাজবদলের স্বপ্ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছি।’-ফাইল চিত্র