• জমি-বাড়ি কিনলেই এবার স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পুর-মিউটেশন
    বর্তমান | ০২ নভেম্বর ২০২৫
  • প্রীতেশ বসু, কলকাতা: জমি-বাড়ি কেনাবেচা করতে গিয়ে মানুষকে যাতে হয়রানির শিকার না হতে হয়, তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। সেই তালিকায় এবার যুক্ত হতে চলেছে আরও এক নয়া নিয়ম। রাজ্যের পুর এলাকায় জমি-বাড়ি কিনলে সংশ্লিষ্ট পুরসভার তথ্যভাণ্ডারে সেই সম্পত্তি নিজের নামে নথিভুক্ত করাতে হয়। চলতি কথায় একে বলে পুর-মিউটেশন। এর জন্য পৃথকভাবে আবদেন করতে হয় পুরসভার কাছে। এসব হয়রানি এড়াতে অনেকে এই কাজ ফেলে রাখেন। তাই এবার স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পুর-মিউটেশনের ব্যবস্থা চালু করছে রাজ্য। অর্থাৎ, জমি-বাড়ি কেনার পর রেজিস্ট্রেশনের সময়েই স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুর-মিউটেশন হয়ে যাবে। সফলভাবে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই সংশ্লিষ্ট পুরসভার নথিতে পুরোনো মালিকের জায়গায় চলে আসবে সম্পত্তির নতুন মালিকের নাম।

    বর্তমানে রেজিস্ট্রেশনের পর পুর-মিউটেশনের জন্য আবেদনকারীকে পৃথকভাবে জমা দিতে হয় দলিল সহ মালিকানা সংক্রান্ত একাধিক নথি। জমা দিতে হয় আগের কোয়ার্টারের সম্পত্তি করের ‘পেমেন্ট রিসিপ্ট’ এবং সচিত্র পরিচয়পত্র। এই প্রক্রিয়াও এখন অনলাইনেই করা যায়। তারপরও পৃথকভাবে আবেদনের ঝক্কি এড়িয়ে যান অনেকে। সে কারণে পুরসভার নথিতে জমি বা বাড়ির পুরোনো মালিকের নামই থেকে যায়। ফলে পুরসভার সম্পত্তি কর হারানোর সম্ভাবনা থাকে। পরবর্তীকালে ওই সম্পত্তি ফের বিক্রি হলে বকেয়া সম্পত্তি কর মেটানোর দায় বর্তায় নতুন মালিকের উপর। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, বর্তমানে শুধুমাত্র অনলাইনে পুর-মিউটেশনের জন্য আবেদন করা যায়। দেখা যাচ্ছে, গত দু’বছরে এভাবে পুর-মিউটেশন হয়েছে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ৬৩৫টি। যা আরও অনেক বেশি হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করছেন আধিকারিকরা। এই জায়গা থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পুর-মিউটেশনের প্রয়োজনীয়তা প্রকট হয়েছে। এই সুবিধা চালু হলে সম্পত্তির মালিকানা সংক্রান্ত সঠিক তথ্য পুরসভাগুলির হাতে থাকবে। 

    সূত্রের খবর, যত দ্রুত সম্ভব এই পরিষেবা চালু করতে একযোগে কাজ করছে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর এবং অর্থদপ্তরের আওতাধীন ‘ডিরেক্টরেট অব রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড স্ট্যাম্প ডিউটি’। একসঙ্গে রাজ্যের প্রতিটি পুরসভায় এই ব্যবস্থা চালুর চেষ্টা চলছে। এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে পুরদপ্তর, কলকাতা পুরসভা এবং নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির সঙ্গে আগেই রেজিস্ট্রেশন ডিরেক্টরেটের পোর্টাল সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পুর মিউটেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে নথি যাচাইয়ের যে প্রক্রিয়া, তা সহজেই করা যাবে। 

    প্রসঙ্গত, জমি বা বাড়ি কিনলে ভূমিদপ্তরের তথ্যভাণ্ডারে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে নতুন মালিকের নাম উঠে যাওয়ার সুবিধা চালু হয়েছে আগেই। পুর-মিউটেশনের ক্ষেত্রেও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালু হলে ক্রেতাদের এ সংক্রান্ত কোনও দুর্ভোগ বা হয়রানির শিকার হতে হবে না বলেই আশা প্রশাসনিক কর্তাদের। 
  • Link to this news (বর্তমান)