• বৃদ্ধের আত্মহত্যার পর থেকে এসআইআর ‘আতঙ্ক’ বীরভূমে! ব্যাঙ্ক থেকে সব সঞ্চয় তুলে নিচ্ছেন স্থানীয়েরা
    আনন্দবাজার | ০২ নভেম্বর ২০২৫
  • বীরভূমের ইলামবাজার। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) ঘিরে আতঙ্কের জেরে দিনদুয়েক আগেই সেখানে আত্মহত্যা করেছেন এক বৃদ্ধ। সেই ঘটনার পর থেকে যেন সংক্রমণের মতো ‘এসআইআর-আতঙ্ক’ ছড়িয়ে গিয়েছে গোটা এলাকায়। ভয়ে আগেভাগেই ব্যাঙ্ক থেকে সমস্ত সঞ্চিত অর্থ তুলে নিচ্ছেন বহু মানুষ!

    জানা গিয়েছে, ইলামবাজারের লেলেগড়ের বাঁধ পাড়া ও নিচু পাড়ার বহু মানুষ আতঙ্কে নিজেদের সমস্ত সঞ্চিত অর্থ ব্যাঙ্ক থেকে তুলে নিতে শুরু করেছেন। স্থানীয়দের একাংশের আশঙ্কা, যদি এসআইআর চালু হয়, তা হলে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন জমানো অর্থ আর তোলা যাবে না। সর্বহারা হয়ে যাওয়ার ভয়ে আগেভাগেই ব্যাঙ্কে লাইন দিয়েছেন তাঁরা। অনেকে আবার মনে করছেন, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে তাঁদের পূর্ববঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। এই আশঙ্কাতেই ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। অনেকের কথায়, “আমরা চাই এসআইআর না-হোক। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই।”

    এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের একাধিক জেলায় ‘আতঙ্ক’ ছড়িয়েছে। গত বৃহস্পতিবার এই ইলামবাজারেরই স্কুলবাগান সুভাষপল্লি এলাকায় আত্মহত্যা করেন ৯৫ বছরের বৃদ্ধ ক্ষিতীশ মজুমদার। পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা ক্ষিতীশ ইলামবাজারে মেয়ের বাড়িতে এসেছিলেন। পরিবারের দাবি, এসআইআর নিয়ে আতঙ্কে ছিলেন ক্ষিতীশ। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল না। শেষ বয়সে তাঁকে দেশান্তরী হতে হবে কি না, এ সব ভেবে ভেবে তিনি মানসিক ভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। শেষমেশ মেয়ের বাড়িতেই আত্মহত্যা করেন তিনি। তার আগে একই কারণে আত্মহত্যা করেছেন উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটির বাসিন্দা প্রদীপ কর। ‘সুইসাইড নোটে’ সে কথা লিখেও গিয়েছেন তিনি। ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নামের বানান ভুল থাকায় গত বুধবার কোচবিহারেও এক জন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বৃহস্পতিবার এসআইআর আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে তামিলনাড়ুতে মৃ়ত্যু হয় বর্ধমানের জামালপুরের এক পরিযায়ী শ্রমিকের। শনিবারই তাঁর দেহ জামালপুরের নবগ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে। সেই আবহে এ বার আতঙ্ক ইলামবাজারের গ্রামেও।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)