বাকি দু’দিন, বিএলএ নিয়োগে এখনও ধীরেই চলেছে শাসক তৃণমূল! এগিয়ে বিজেপি, তার পরেই রয়েছে সিপিএম
আনন্দবাজার | ০২ নভেম্বর ২০২৫
আর মাত্র দু’দিন। তার পরেই শুরু হয়ে যাবে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দেওয়ার কাজ। বুথস্তরীয় আধিকারিক (বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও)-দের সঙ্গে এই কাজে থাকার কথা রয়েছে বুথ লেভেল এজেন্ট বা বিএলএ-দের। ইতিমধ্যে বিজেপি ও সিপিএম কয়েক হাজার বিএলএ নিয়োগও করে ফেলেছে। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হিসাব বলছে, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানের পরেও বিএলএ নিয়োগে এখনও বেশ পিছিয়ে খোদ রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল!
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত বিএলএ নিয়োগে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এ পর্যন্ত ২৯৪ জন বিএলএ-১ এবং ৭৯১২ জন বিএলএ-২ নিযুক্ত করেছে তারা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিপিএম। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তারা ১৪৩ জন বিএলএ-১ এবং ৬১৭৫ জন বিএলএ-২ নিয়োগ করেছে। অন্য দিকে, দুই দলের থেকেই বেশ পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। এ পর্যন্ত মাত্র ৩৬ জন বিএলএ-১ এবং ২৩৪৯ জন বিএলএ-২ নিযুক্ত করেছে তারা।
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে কমিশনের নিযুক্ত বিএলওরা এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন। প্রতিটা বুথ বা ভোটকেন্দ্রে বিএলও-দের সঙ্গে থাকবেন বিএলএ-রাও, যাতে গোটা প্রক্রিয়ার উপর সমস্ত রাজনৈতিক দল নজর রাখতে পারে। বিএলও যখনই কারও বাড়িতে যাবেন, তখন সঙ্গে থাকবেন দলের নিযুক্ত বিএলএ-২। কোনও ভুলভ্রান্তি দেখলেই তা ধরিয়ে দেবেন তাঁরা। অথচ, সব বুথে এখনও বিএলএ নেই। তবে যত বেশি সংখ্যক বিএলএ থাকবেন, কাজের সুবিধাও তত বেশি হবে। সে জন্য গত মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠকেও কমিশনের তরফে বলা হয়েছিল, আরও বুথভিত্তিক এজেন্টের নাম দেওয়া হোক। কমিশন এও জানিয়েছিল, বিএলএ-রা ৫০টা করে ফর্ম জমা দিতে পারবেন। কিন্তু তাতেও বঙ্গের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বিএলএ নিয়োগ নিয়ে ‘অনীহা’ কাটেনি।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দলের প্রায় ১৮ হাজার নেতার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা অভিষেক। আহ্বান জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েক মাস কমিশন নির্বাচিত বিএলও-কে সারা ক্ষণ নজরের মধ্যে রাখতে হবে। সর্বক্ষণ বিএলও-দের সঙ্গে থেকে কাজ করতে হবে বিএলএ-দের, যাতে কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায়। তা সত্ত্বেও দেখা গেল, বিএলএ নিয়োগে এখনও প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলের থেকে বেশ পিছিয়ে তৃণমূল। তবে তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ৩ নভেম্বর অর্থাৎ সোমবারের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত বুথে বিএলএ-২দের নাম কমিশনে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। ফলে সোমবারের মধ্যে এই ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করতে পারে রাজ্যের শাসকদল।
গত ২৮ অক্টোবর থেকে পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের ১২টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শুরু হয়ে গিয়েছে এনুমেরেশন ফর্ম ছাপানোর কাজ। একই দিনে শুরু হয়েছে বিএলওদের প্রশিক্ষণও। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলবে। ৪ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমেরেশন ফর্ম দেওয়া হবে। কেউ রাজ্যের বাইরে গেলে বা প্রবাসীরা অনলাইনেও ফর্ম ভরতে পারবেন। অন্য দিকে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত হবে ৯ ডিসেম্বর। এই তালিকা নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারির মধ্যে জানাতে হবে। পরবর্তী পর্যায়ে ৯ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে অভিযোগ শোনা এবং খতিয়ে দেখার কাজ। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে ৭ ফেব্রুয়ারি।