বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের বিতর্কিত পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক তরজা
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০২ নভেম্বর ২০২৫
এসআইআর ঘোষণার পর থেকেই বাংলায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে অনেকে আত্মহত্যা করেছেন। মতুয়া সম্প্রদায় নাগরিকত্ব হারানোর ভয়ে কাঁটা হয়ে আছে। এর মধ্যেই সমাজমাধ্যমে বিতর্কিত পোস্ট বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকারের।
সমাজমাধ্যমে হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়কের দাবি, ‘এসআইআর-এ নাম কেটে গেলেও এইটুকু বলতে পারি সিএএ তে আবেদন করলে আপনি নাগরিকত্ব পাবেন এবং ভোটার লিস্টে নাম উঠবেই।‘ এই পোস্টের পরেই শোরগোল পড়ে যায়। যদিও এই পোস্ট নিয়ে বিজেপি বিধায়কের সাফাই, ‘ইলেকশন কমিশনের যে আইন কার্যকর রয়েছে, তাতে হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আইনের মধ্যে যাঁদের নাম থাকার কথা তা থাকবে, যাঁদের নাম বাদ পড়ার তাঁদের বাদ পড়বে।‘
তাঁর বক্তব্য, ‘১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে জন্মগ্রহণ করা এবং ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকা নাগরিকদের ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা নেই। আবার ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের পরে এবং ২০০৪ সালের ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জন্ম নেওয়া নাগরিকদের জন্য শর্ত হল, তাদের বাবা-মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকতে হবে।‘
সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট-এর ৬(বি) ধারা অনুযায়ী কেউ যদি এই আইনের আওতায় ফর্ম পূরণ করেন, তাহলে রিসিট পাওয়ার আগে পর্যন্ত সমস্ত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা পাবে। অর্থাৎ, উদ্বাস্তুদের কোনও নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। অসীম সরকার বলেন, তিনি কেবলমাত্র উদ্বাস্তুদের কথা বলেছেন। যাঁরা ভারত ভাগের পর শরণার্থী হিসেবে এসেছেন এবং ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতে থাকছেন।
হিন্দু বা মুসলমান কারও নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না বলে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু ভারত ভাগের বলি উদ্বাস্তুদের কথা বলেছি। কোনও সম্প্রদায়ের নাম টেনে কিছু বলিনি।‘ তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের গোসাই পরিষদের সম্পাদক রঞ্জিত বাইন এ বিষয়ে বলেছেন, ‘এও কি সম্ভব? যার নাম এসআই আর এ বাদ পড়বে, সে আবার নাকি সিএএতে নাগরিকত্ব পাবেন? পুনরায় ভোটার তালিকায় তার নাম তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নিচ্ছেন বিধায়ক? যতসব ভাঁওতাবাজি।‘
রঞ্জিত ঘোষের কথায়, ‘উনি তো একটি রাজনৈতিক দলের বিধায়ক। তিনি তো নির্বাচন কমিশনারের কোন আধিকারিক নন। তাহলে এ কথা তিনি কী ভাবে বলছেন? আসলে বিজেপি দলটাই একটা ভাঁওতাবাজের দল। বিভ্রান্তি ছড়ানো তাদের কাজ। মানুষকে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভুল পথে পরিচালনা করা তাদের দলের বিধায়ক সাংসদ এবং নেতাদের অভ্যেস। যা ইতিমধ্যে আমরা মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষেরা এবং সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছে।‘