নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ওয়ান রেশন ব্যবস্থায় ‘ই-ফুড ভাউচার’ নামে ফুড কুপন দেওয়ার ভাবনাচিন্তা করছে মোদি সরকার। এ ব্যাপারে পাইলট প্রকল্প চালু করারও পরিকল্পনা করে ফেলেছে খাদ্যমন্ত্রক। গত ২৮ অক্টোবর মন্ত্রকের অভ্যন্তরীণ রিভিউ মিটিংয়ে এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে ‘প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা’য় যে বিনামূল্যে চাল-গম দেওয়া হয়, সেখানেই বিতরণ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা চলছে। মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিবকে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে বিস্তারিত নোট তৈরি করে মন্ত্রীকে পাঠানোর জন্য। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি ‘ঘুরিয়ে’ খাদ্যশস্যর পরিবর্তে রেশন গ্রাহকদের ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার (ডিবিটি)-র আগের ধাপ এই ই-ফুড ভাউচার?
রেশনে খাদ্যশস্যর পরিবর্তে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল খাদ্যমন্ত্রক। চণ্ডীগড়ে তা চালুও করা হয়েছিল। কিন্তু রেশন দোকানদের প্রবল আপত্তিতে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় কেন্দ্র। রেশন দোকানদাররা গ্রাহককে খাদ্যশস্য বিতরণ করে কেজি প্রতি ৯০ পয়সা কমিশন পান। উত্তর-পূর্ব সহ পাহাড়ি এলাকায় কেজি প্রতি ১ টাকা ৮০ পয়সা। এছাড়া বাড়তি হিসেবে ‘ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অব সেল’ (ই-পস) মেশিন ব্যবহার এবং ইলেকট্রনিক কাঁটা (ওজন মেশিন) ব্যবহার করলে মেলে প্রতি কেজি খাদ্যশস্যে ২১ পয়সা। ফলে খাদ্যশস্যর বদলে ডিবিটি হলে এগুলি বন্ধ হবে। প্রশ্নের মুখে পড়বে দেশের ৫ লক্ষ ৪১ হাজার ৬৬০ রেশন দোকানির জীবন-জীবিকা। অন্যদিকে, ই-ফুড ভাউচারের উদ্যোগে দোকানদারদের পরস্পরের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাঁধতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সমস্যায় পড়তে পারেন গ্রাহকরাও। তাই কেন্দ্রের এহেন উদ্যোগে আপত্তি জানিয়ে বিরোধিতায় সরব ‘অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন।’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, রেশন দোকানদের ভাতে মারতে চাইছে মোদি সরকার। প্রতিটি দোকানে এলাকার বাসিন্দা হিসেবে গ্রাহক সংখ্যা নির্দিষ্ট। তার মধ্যে যদি এক দোকানের গ্রাহক অন্য দোকানে খাদ্যশস্য নেন, তাহলে কমিশন কমে যাবে। খাদ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, ব্যবস্থা কার্যকর হলে রেশন গ্রাহকদের মোবাইলে পাঠানো হবে ওই ই-ফুড ভাউচার। সেটি দেখিয়ে গ্রাহক তাঁর পছন্দমতো দেশের যে কোনও রেশন দোকান থেকে খাদ্যশস্য নিতে পারবেন। দেশে চালু রয়েছে ‘ওয়ান নেশন ওয়ান রেশন কার্ড’ ব্যবস্থা।