নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ভোটার তালিকা শুদ্ধকরণে ‘স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন’ (এসআইআর) শুরু হয়েছে। আর এই কাজের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা পড়েছেন মহা ফাঁপরে। বেতনের বাইরে বাড়তি ছ’ হাজার টাকার ভাতাতেও তাঁরা আশ্বস্ত নন। কারণ, মাথায় ঘুরছে সাসপেনশনের ভয়। কাজে কোনওরকম ত্রুটি হলে যদি একবার চাকরি থেকে সাসপেন্ড হতে হয় তাহলে তার দায়িত্ব নেবে কে? তাই পশ্চিমবঙ্গে পোস্টিং কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের একাংশ নির্বাচন কমিশনের বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) হিসেবে কাজ করতে চাইছেন না। কর্মচারীদের মধ্যে
যারা নতুন পোস্টিংয়ে বাংলায় গিয়েছেন, তাঁরা ভালো করে এলাকাই চেনেন না। তাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে কী করে সঠিক এসআইআরের কাজ করবেন, তা নিয়েও রয়েছে সমস্যা। আবার বিধি মেনে কাজ না
করলে ঝুলছে ‘শাস্তির খাঁড়া।’ তাই বিপাকে পড়া কেন্দ্রীয় সরকারি
কর্মীরা সুরাহা চেয়ে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের কাছে চাইছে সমস্যার সমাধান। যদিও কমিশন এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, নিয়ম মেনেই কাজ করতে হবে।
আগামীকাল মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ইনিউমারেশন ফর্ম ফিলাপ পর্ব। চলবে এক মাস। আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের ১২ রাজ্যে হবে এসআইআর। তার জন্য চলছে ট্রেনিং। তবে এই কাজে এবারই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকারের স্থায়ী কর্মীদেরও এসআইআরের কাজে নামানো হয়েছে। বিএলও হিসেবে। সাধারণত, রাজ্য সরকারের স্কুল শিক্ষকরাই বিএলও’র কাজ করে থাকেন। তবে পশ্চিমবঙ্গে এবার সম্প্রতি প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গিয়েছে। ফলে শিক্ষকের অভাব। তাই কর্মসূত্রে পশ্চিমবঙ্গে পোস্টিং কেন্দ্রীয় সরকারি স্থায়ী কর্মীদের বিএলও হিসেবে ‘ডেপুটেশনে’ নিয়োগ করা হয়েছে। রাজ্যে যেসব কেন্দ্রীয় সরকারি অফিস রয়েছে, তার মধ্যে থেকে রেল এবং ডাক বিভাগের কর্মীদের এসআইআরের কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। নিজেদের ডিউটির ফাঁকে তাঁদের এসআইআরের কাজ করতে হবে। কিন্তু কাজে নেমে তাঁরা পড়েছেন ফাঁপরে। কাজে ত্রুটির জন্য রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে যদি কমিশন কোনও কারণে কড়া ব্যবস্থাও নেয়, তাহলে নির্বাচন পর্ব মিটে গেলে তাঁদের ফের রাজ্য সরকার কাজে ফিরিয়ে নেবে, এটা নিশ্চিত। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের কী হবে? তাঁদের দায়িত্ব কে নেবে? এই ভয়ে কাঁটা পশ্চিমবঙ্গে কর্মসূত্রে থাকা বিএলও’র কাজের দায়িত্ব চাপানো কর্মীদের একাংশ।