নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: তিনদিন পর মেঘমুক্ত আকাশ। দেখা মিলল সূর্যের। তাই রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন পাহাড়ের ‘রানি’ দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তায় ঢল নামল পর্যটকের। তাঁদের কেউ কেউ কাঞ্চনজঙ্ঘার ছবিও ক্যামেরা বন্দি করেন। এদিকে, বৃষ্টিতে পাহাড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪২টি বাড়ি ও পাঁচটি রাস্তা। এখনও ত্রাণ শিবির চালু রয়েছে ৩৫টি। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি, রাস্তা মেরামতিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যে তারা ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরি করেছে। মন-থা’র পরোক্ষ ও পশ্চিমীঝঞ্ঝার প্রভাবে পাহাড়ে দুর্যোগের আশঙ্কা করেছিল প্রশাসন। দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে রাখে। নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঝঞ্ঝার সেই প্রভাব পড়েনি। শনিবার বিকেল থেকে আবহাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হয়। রবিবার সকালে পাহাড়ের আকাশ ছিল মেঘমুক্ত। সূর্যের আলোয় ম্যাল রোড ঝলমলিয়ে ওঠে। তাই সকাল সকাল হটেল থেকে রাস্তায় নামেন পর্যটকরা।
পর্যটকরা বলেন, বৃষ্টির জেরে কয়েকদিন ধরে সেভাবে ঘুরতে পারিনি। হোটেলের ঘরেই ছিলাম। তাই দুর্যোগ কাটতেই ম্যাল রোডের পরিবেশ, কাঞ্চনজঙ্ঘার দৃশ্য উপভোগ করছি। হোটেল ব্যবসায়ীরা বলেন, পাহাড়ে পর্যটক আসার ফ্লো ভালো রয়েছে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক মণীষ মিশ্রা বলেন, আবহাওয়া ভালো রয়েছে। দুর্যোগের কোনও পূর্বাভাস নেই। তা হলেও প্রশাসন সতর্ক আছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতি থেকে শনিবার পর্যন্ত পাহাড়ের আকাশ ছিল মেঘলা। কিছু জায়গায় ভারী বৃষ্টিও হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, তিনদিনের বৃষ্টিতে জোড়বাংলো-সুখিয়াপোখরি, দার্জিলিং-পুলবাজার, রংলিরংলিয়ট প্রভৃতি জায়গা পিএমজিএসওয়াইয়ের চারটি এবং জিটিএ’র একটি রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ৪২টি। যারমধ্যে পুরোপুরিভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩টি বাড়ি। বাকিগুলি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। জেলাশাসক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দাদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। শীঘ্রই ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও রাস্তাগুলি মেরামত করা হবে। ত্রাণ শিবির চালু রয়েছে ৩৫টি। তাতে ৩০০টি পরিবারের ১১শো সদস্য রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে।
এদিন জেলার সমতলভাগ শিলিগুড়িতেও ঝঞ্ঝা ছিল না। বৃষ্টি হয়নি। তবে আকাশ দিনভর মেঘলা ছিল। সেই সঙ্গে চলে ঠান্ডা হাওয়া। এদিনও এখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানীয়রা বলেন, তিনদিনের বৃষ্টির জেরে এখানে হালকা শীতের আমেজ তৈরি হয়েছে।