স্বপ্নার দাবিতে তৎপরতা, ১৩ কোটি ব্যয়ে উত্তরবঙ্গে প্রথম সিন্থেটিক ট্র্যাক
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
ব্রতীন দাস, জলপাইগুড়ি: এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্না বর্মন সরব হতেই বাংলায় বিধানসভা ভোটের মুখে ক্রীড়ার উন্নয়নে তৎপর কেন্দ্র। ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরবঙ্গে প্রথম সিন্থেটিক ট্র্যাক তৈরি হতে চলেছে জলপাইগুড়িতে। সম্প্রতি ‘বর্তমান’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে উত্তরবঙ্গে অ্যাথলিটদের অনুশীলনের জন্য কোনও সিন্থেটিক ট্র্যাক না থাকায় একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন স্বপ্না। আক্ষেপের সুরে বলেন, উপযুক্ত পরিকাঠামো যদি না থাকে, তাহলে নতুন স্বপ্না বর্মন তৈরি হবে কীভাবে? উত্তরবঙ্গে খেলাধুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস পেলে তিনি রাজনীতির ময়দানেও নামতে রাজি বলে সরাসরি জানিয়ে দেন অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত ওই অ্যাথলিট।
সূত্রের খবর, আগে থেকে জলপাইগুড়ির সাই কমপ্লেক্সে সিন্থেটিক ট্র্যাকের কথাবার্তা চললেও স্বপ্না বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতেই এ ব্যাপারে বিশেষ তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। রবিবার স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার (সাই) জলপাইগুড়ি সেন্টারের ইনচার্জ ওয়াসিম আহমেদ বলেন, ‘খেলো ইন্ডিয়া’ প্রকল্পের অধীনে আমরা সিন্থেটিক ট্র্যাক পেতে চলেছি। ৪০০ মিটার ট্র্যাক তৈরি হবে। ইতিমধ্যেই মাটি পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। সিন্থেটিক ট্র্যাকের জন্য ১৩ কোটি টাকা খরচ হবে বলে জানতে পেরেছি। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে গোটা রাজ্যের মধ্যে কলকাতায় সাই সেন্টারে এবং যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সিন্থেটিক ট্র্যাক রয়েছে। জলপাইগুড়িতে সিন্থেটিক ট্র্যাক হলে তা রাজ্যে তৃতীয় এবং উত্তরবঙ্গে প্রথম হবে।
জলপাইগুড়িতে রাজ্যের তরফে গড়ে দেওয়া বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনে ২০১৭ সাল থেকে সেন্টার চালাচ্ছে সাই। মূলত খেলাধুলোর প্রসারে ওই মাঠ ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়াকে। কিন্তু তারা ওই বিশাল পরিকাঠামো ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারছে না বলে অভিযোগ। এনিয়ে গত মে মাসে শিলিগুড়িতে বিজনেস সামিটের মঞ্চ থেকে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাই যদি খেলাধুলোর প্রসারে জলপাইগুড়ির বিশ্ববাংলা ক্রীড়াঙ্গনের পরিকাঠামো ঠিকমতো কাজে লাগাতে না পারে, সেক্ষেত্রে ওই মাঠ অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হবে বলেও সাফ জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, মমতার ওই হুঁশিয়ারির পরই উত্তরবঙ্গে খেলাধুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নে কেন্দ্রকে বেশকিছু প্রস্তাব দেয় সাই। যার মধ্যে অন্যতম ছিল জলপাইগুড়িতে স্পোর্টস অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কমপ্লেক্সে সিন্থেটিক ট্র্যাক তৈরির বিষয়টি। জলপাইগুড়ির সোনার মেয়ে স্বপ্না বর্মন নিজে এখন এনিয়ে সরব হওয়ায় বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে তিস্তাপাড়ের শহরে সিন্থেটিক ট্র্যাক তৈরির কাজ শুরু করতে তৎপর কেন্দ্র। সাইয়ের জলপাইগুড়ি সেন্টারের ইনচার্জ ওয়াসিম আহমেদ বলেন, স্বপ্না বর্মনের পথ ধরে অ্যাথলিটে আমাদের সাফল্যের ধারা বহমান। এবারও এশিয়ান যুব চ্যাম্পিয়নশিপে আমাদের সেন্টারের দু’জন মিষ্টি কর্মকার ও স্বপ্নিল দত্ত অংশ নেয়। মালদহের মেয়ে মিষ্টি অষ্টম এবং মালবাজারের ছেলে স্বপ্নিল ষষ্ঠ হয়েছে। স্বপ্না বলেন, এটা বড় সুখবর। সিন্থেটিক ট্র্যাক হলে এখনকার খেলোয়াড়দের মানোন্নয়ন হবে। তাঁদের স্বপ্নপূরণে হবে। উত্তরবঙ্গের ক্রীড়াক্ষেত্রের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে আমার আওয়াজ থেমে থাকবে না। ট্র্যাকের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হচ্ছে। - নিজস্ব চিত্র