শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল, ন্যায্যমূল্যের দোকানে তালিকার অর্ধেক ওষুধই অমিল, ভোগান্তি
বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের দোকানের সামনে টাঙানো তালিকায় জ্বলজ্বল করছে সব ওষুধের নাম। কিন্তু, ওই পর্যন্তই। বাস্তবে সেই তালিকার পঞ্চাশ শতাংশও মেলে না। বিশেষ প্রয়োজনীয় অনেক দামি ওষুধই এখানে পাওয়া যাচ্ছে না। নদীয়া জেলার শক্তিনগর হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের এমনই হাল। প্রতিদিন রোগীর পরিবারের লোকজন চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন নিয়ে এই দোকানে ভিড় করলেও, অর্ধেকের বেশি ওষুধ না পেয়ে তাঁরা ফিরে যাচ্ছেন।
রাজ্যের উদ্যোগে ২০১২-’১৩ সালে জেলা হাসপাতালগুলিতে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকান চালু হয়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের এই দোকানের সামনে টাঙানো তালিকায় প্রায় ১২৪ রকমের ওষুধের নাম লেখা রয়েছে। কিন্তু, বাস্তবে সেখানে মাত্র ৫০ শতাংশ ওষুধই মজুত রয়েছে। স্থানীয় জাভাগ্রাম থেকে আসা এক রোগীর আত্মীয় তন্ময় দাস বলেন, শক্তিনগর হাসপাতালের ন্যায্যমূল্যের দোকানে গিয়ে পাঁচটি ওষুধের মধ্যে মাত্র তিনটি পেয়েছি। বাকি দু’টি স্টকে না থাকায় দিতে পারেনি। বাইরে থেকে বেশি দামে কিনতে হয়েছে। ধুবুলিয়ার বাসিন্দা মঞ্জুরা বিবি বলেন, আমার ছেলে পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। ডাক্তার ওষুধ আর ইঞ্জেকশন লিখে দেন। ন্যায্যমূল্যের দোকানে ওষুধগুলি পেয়েছি। কিন্তু, ইঞ্জেকশন পাইনি। সেটা বাইরে থেকে কিনতে হবে। দাম অনেক বেশি পড়ে যাবে।
ন্যায্যমূল্যের দোকানে কর্মরত অজিদ শেখ বলেন, এটা সত্যি যে সাইনবোর্ডে যত ওষুধের নাম লেখা আছে, তার অর্ধেকও আমাদের স্টকে থাকে না। বেশি দামি ওষুধ সবসময় রাখা সম্ভব হয় না। যতগুলি আছে, সেগুলিও খুব কম পরিমাণে থাকে। স্টকে জ্বর, পেট ব্যথা, সুগার ইত্যাদির ওষুধ আছে। হার্ট, কিডনি সংক্রান্ত ওষুধ তুলনামূলক কম থাকে। আমরা বিভিন্ন ওষুধ অনুযায়ী ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিয়ে থাকি। চিকিৎসক ব্র্যান্ডেড ওষুধের নাম লিখে দিলে সমস্যা বেশি হয়। তখন সব ওষুধ দিতে পারি না। বাধ্য হয়ে রোগীর পরিবারকে বাইরে থেকে কিনতে হয়।
হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, আমাদের এখন পুরোপুরি ন্যায্যমূল্যের ওষুধের উপর নির্ভরশীল হতে হয় না। হাসপাতালের নিজস্ব ফার্মেসির কাছে ওষুধের যে স্টক আছে, সেগুলি দিয়েই বিনামূল্যে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। ন্যায্যমূল্যের দোকানের ২৫২টি এনলিস্টেড মেডিসিন আছে, যেগুলি আমরা কিনে থাকি। সেগুলি স্টকে ঠিকঠাক আছে কি না, সেটা আমরা দেখি। এর বাইরে অন্য কোনও ওষুধ চাইলে স্টকে আছে কি না, তা দেখা আমাদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। তবে ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে গিয়ে যদি কেউ এনলিস্টেড মেডিসিন না পান, তা নিয়ে অভিযোগ করলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। নিজস্ব চিত্র