• পরিত্যক্ত জমিতে সুপারি চাষ করে বিকল্প আয়ের দিশা দেখাচ্ছেন বসিরহাটের গৃহস্থ
    বর্তমান | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত জমি পড়েই ছিল। আগাছা জন্মেছিল। বাড়ছিল মশা-মাছি। নিজের সেই পরিত্যক্ত জমিটি সাফসুতরো করে বিকল্প আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন বসিরহাট শহরের মৈত্রবাগান কলবাড়ির অরবিন্দ মণ্ডল। অব্যবহৃত জমিটিতে তিনি প্রায় চারশো সুপারি গাছের বাগান তৈরি করেন। এখন সেই বাগানই তাঁর পরিবারের আয়ের অন্যতম উৎস। তিনি জানান, এসব দেখে এলাকার অনেকেই এগিয়ে আসছেন। আমি প্রত্যেককে উৎসাহ দিচ্ছি। এই গাছ রোপণ করলে আয় নিশ্চিত। 

    এলাকার কাউন্সিলার ভাস্কর মিত্র বলেন, ‘অরবিন্দবাবুর চাষ মানুষকে দিশা দেখাবে নিশ্চিত। তাই কেউ যদি নিজে এগিয়ে এসে চাষ করতে চান সরকারিভাবে যতটা সাহায্য করা যায় করা হবে। এর ফলে একদিকে যেমন মানুষ নতুন রোজগারের দিশা পাবেন। সঙ্গে পরিবেশও বাঁচবে।’ সুমন্ত প্রামাণিক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘অরবিন্দ প্রমাণ করেছেন চাষ শুধু বড় জমিতেই হয় এমন নয়, ইচ্ছাশক্তি আর পরিশ্রম থাকলে ছোট জায়গাও সোনায় পরিণত হতে পারে। তাঁর সুপারি রপ্তানি হয় ভিন জেলাতেও।’ আর এক বাসিন্দা দীপঙ্কর রায় বলেন, ‘এই চাষ দেখে আমরা উৎসাহ পেয়েছি। অরবিন্দবাবুর কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমিও সুপারি চাষের দিকে ঝুঁকছি। অন্যান্য মানুষও এগিয়ে আসছেন।’

    অরবিন্দবাবু জানান, বাগান থেকে বছরে এক লক্ষ টাকার মতো আয় হয়। যদিও এই কাজ তিনি শুরু করেছিলেন আয়ের কথা না ভেবেই। জমি সাফ করে তিনবছর আগে কয়েকটি সুপারি গাছের চারা বসিয়েছিলেন। সে গাছ ফল দিতে শুরু করে। অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ধীরে ধীরে গাছের সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০০ করেন অরবিন্দ। নিয়মিত পরিচর্যা করেন। এখন সুপারির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ওষধি গাছও বসাচ্ছেন। তুলসী, ইনসুলিন অ্যালোভেরা, বাসক, নিম ইত্যাদি রয়েছে বাগানে। কৃষি বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘সুপারি গাছ সাধারণত আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যেই ফল দেয়। একবার রোপণ করলে প্রায় পঁচিশ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। জল এবং ছায়াযুক্ত পরিবেশে ভালোভাবে বেড়ে ওঠে।’ আর অরবিন্দবাবু বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, ‘এই চাষে খরচ কম। মাটির একটু যত্ন নিলেই ভালো ফলন হয়। অল্প জমিতেই আয় সম্ভব। সুপারির ছায়ায় ওষধি গাছ বসিয়েছি। তা থেকেও রোজগার হচ্ছে। মোট দেড় বিঘা জমিতে এই চাষ করে লক্ষ টাকা রোজগার হয়। ভবিষ্যতে চাষ বাড়ানোর ইচ্ছা আছে।’  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)