শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্য়ায়: আর জল্পনা নয়, এবার সব জল্পনার অবসান। এবার সত্যি। এবার বাস্তব। তৃণমূলে যোগদান করলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ((Sovan Chatterjee Joins TMC)। 'ঘরের ছেলে ঘরে ফিরলেন!' ছাব্বিশের মহারণের (West Bengal Assembly Election 2026) আগে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sovan Chatterjee) তৃণমূলে (TMC) যোগদানকে এভাবেই তুলে ধরলেন সুব্রত বক্সী ও অরূপ বিশ্বাস। ওদিকে তৃণমূলে ফের যোগ দিয়ে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ও বললেন, "আমার নিজের ঘর, নিজের সংসার। আত্মিক যোগাযোগ। ঘরের ছেলে হিসেবেই ঘরে ফিরলাম।"
এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের ফের তৃণমূলে যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করেন অরূপ বিশ্বাস ও সুব্রত বক্সী। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেই এদিন ফের তৃণমূলে যোগ দিলেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও (Baisakhi Banerjee)। দুজনকেই দলীয় উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। এই যোগদান প্রসঙ্গে অরূপ বিশ্বাস ও সুব্রত বক্সী বলেন, শোভন চট্টোপাধ্য়ায় তৃণমূলের ঘরের ছেলে। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরছেন! এখন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নেতৃত্বে মানুষের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সামিল হবেন প্রাক্তন মেয়র ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। একইসঙ্গে তাঁরা স্বাগত জানান বৈশাখীক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও।
ওদিকে শোভন চট্টোপাধ্য়ায় বলেন, "আমার নিজের ঘর, নিজের সংসার। এর সঙ্গে আত্মিক যোগাযোগ। দিদির আশীর্বাদেই দলে ফেরা। ঘরের ছেলে হিসেবে ঘরে ফিরলাম। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার জন্য আমার সামর্থ্য মতো, যেভাবে মমতাদি চাইবেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় চাইবেন, সেটাই হবে। দলকে শক্তিশালী করতে, আগামীদিনে আমার উপর যে দায়িত্ব অর্পণ হবে, তা যথাযোগ্যভাবে পালন করব। আমার সুন্দর ঘরকে আগামীদিনে আমার সমস্ত শক্তি দিয়ে আরও শক্তিশালী করে তুলব। দলকে শক্তিশালী করতে মাঠে নামব। দল যা নির্দেশ দেবে তা পালন করব।"
তৃণমূলে যোগদানের পর সোজা তৃণমূল ভবন থেকে কালীঘাটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন শোভন-বৈশাখী। প্রসঙ্গত, এদিন সকালেই তৃণমূলের তরফে এক্স-হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করা হয়। যেখানে বিকেল ৩ টেয় TMC ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে কথা বলা হয়। আরও বলা হয়, সেই সাংবাদিক বৈঠকে সুব্রত বক্সী ও অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে 'হেভিওয়েট' যোগদান হবে তৃণমূলে। তখন থেকেই আজ তৃণমূলে ফের শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের যোগদান নিয়ে জল্পনা জোরদার হয়ে ওঠে। অবশেষে সেই জল্পনাতেই পড়ল শিলমোহর! ছাব্বিশের ভোটের আগেই ঘাসফুলে কামব্যাক কাননের।
উল্লেখ্য অক্টোবরে উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দার্জিলিংয়ে, তখন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সেখানেই পৌঁছে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়! সেখানেই মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁর। যদিও জানা যায়নি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁকে ডেকেছিলেন নাকি শোভন চট্টোপাধ্য়ায় নিজেই সেখানে গিয়েছিলেন! তবে সূত্রের খবর, প্রায় ২ ঘণ্টা বৈঠক হয় তাঁদের। জল্পনার পারদ চড়তে শুরু করে তখন থেকেই!
যার সলতে পাকানো অবশ্য শুরু হয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর-ই। সেদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গে কালীঘাটে দেখা করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। প্রায় ঘণ্টা তিনেক তাঁদের কথা হয়েছিল। যদিও অভিষেকের সঙ্গে সেদিন কী কথা হয়েছিল তা খোলসা করেননি শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। তবে নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি এখন থেকে তৃণমূল দলে সক্রিয়ভাবে কাজ করতে চান! এরপর শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের NKDA চেয়ারম্যান পদপ্রাপ্তি এতে নয়া মাত্রা যোগ করে। তাঁর তৃণমূলে ফেরার পথ যেন প্রশস্ত করে।