সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধর্ম, বর্ণ, অর্থ-প্রেমে কোনও কিছুই বিশেষ গুরুত্ব পায় না। দুটো মানুষের মনের মিল হলে তাঁদের আর আটকে রাখে! তবে পুলিশ কিন্তু বলছে অন্য কথা। রাজ্য পুলিশের তরফে ফেসবুক পোস্টে বলা হচ্ছে, ‘প্রেমে পড়বেন বুঝেশুনে।’ অর্থাৎ ভালো করে না জেনে প্রেম বা অ্যাপ দেখে সম্বন্ধ একদম নয়! চলুন জেনে নেওয়া যাক, কেন একথা বলা হচ্ছে পুলিশের তরফে।
সোশাল মিডিয়ায় প্রেম এখন একেবারেই নতুন কিছু নয়। বহু সফল দম্পতির পরিচয় হয়েছে এই ফেসবুক, ইস্টাগ্রামের দৌলতেই। ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে বহু মানুষের বিয়ে হয়েছে। তবে প্রতারিতের সংখ্যাও কম নয়। তাঁদেরই দলের একজন হুগলির সিঙ্গুরের বাসিন্দা ২৯ বছরের এক তরুণী। ব্যাপারটা ঠিক কী? কয়েক মাস আগে হুগলী পুলিশ (গ্রামীণ)-এর সাইবার গোয়েন্দাদে দ্বারস্থ হন ওই তরুণী। জানান, ম্যাট্রিমনিয়াল সাইটে অনুপম রায় নামে এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। যুবক নিজেকে চালকলের মালিক বলে পরিচয় দেন। এগোয় কথাবার্তা। মন দেওয়া নেওয়াও হয়। কিন্তু দেখা করা তো দূর, ভিডিও কলও কোনওদিন করেননি ওই যুবক। যদিও তরুণীর সন্দেহ হয়নি। কারণ, নানাকারণ দেখিয়েছেন যুবক। যা বিশ্বাসও করেছেন তরুণী। এক পর্যায়ে যুবক নাকি হবু স্ত্রীকে জানান, আয়কর সংক্রান্ত কিছু গোলমালের ফলে ‘ফ্রিজ’ করে দেওয়া হয়েছে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তরুণীর কাছে ৯ লক্ষ টাকা ধার যান যুবক। মা ও দিদিমার সহযোগিতায় প্রেমিককে সেই টাকা দিয়েও দেন তিনি। পরবর্তীতে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আরামবাগ শাখার ডিপোজিট স্লিপের ছবিও দেন অনুপম।
কিন্তু সে টাকা পাননি তরুণী। উলটে সমস্যার কথা জানিয়ে আরও টাকার দাবি করতে থাকেন যুবক। তরুণীর সন্দেহে হলেও বিত্তশালী হবু জামাইকে হাতছাড়া করতে চাননি তাঁর মা। দফায় দফায় যুবককে ৪৩ লক্ষ টাকা দেন বলেই দাবি। এরপরই আচমকা ম্যাট্রিমনিয়াল সাইট থেকে উধাও হয়ে যায় যুবকের প্রোফাইল। নম্বরও ‘নট রিচেবল।’ এরপরই পুলিশের দ্বারস্থ হন তরুণী। গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত অভিষেক রায় ওরফে অনুপমকে। গ্রেপ্তার হন চক্রের পাণ্ডা-সহ আরও ২ জন। এই ঘটনাকে তুলে ধরেই পুলিশের আর্জি, ‘একটু দেখেশুনে ম্যাট্রিমোনিয়াল সাইট ব্যবহার করবেন। বিয়ের নামে প্রতারণার ফাঁদ কোথায় কীভাবে পাতা রয়েছে, কে বলতে পারে!’