‘দলকে শক্তিশালী করতে পথে নামব’, তৃণমূলে ঘর ওয়াপসি শোভনের, সঙ্গী বৈশাখী
প্রতিদিন | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ সাত বছর পর কামব্যাক। বিধানসভা ভোটের আগেই তৃণমূলে ঘর ওয়াপসি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। সঙ্গী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূল ভবনে অরূপ বিশ্বাস ও সুব্রত বক্সির হাত থেকে দলীয় পতাকা নেন দু’জনে। দলকে শক্তিশালী করতে পথে নামবেন বলেই জানান শোভন। দলে প্রত্যাবর্তনের পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন। কালীঘাটে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁদের।
‘ঘরের ছেলে’ শোভনের ঘরে ফেরা প্রসঙ্গে এদিন অরূপ বিশ্বাস বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের কর্মযজ্ঞে শামিল হওয়ার জন্য তাঁরা আবেদন করেছিলেন। আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে অনুমোদনে সুব্রত বক্সি তাঁদের হাতে পতাকা দেন। আসলে শোভন ঘরের ছেলে। তিনি আবার ঘরে ফিরলেন। আজ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক হিসাবে তাঁরা কাজ করবেন।” সুব্রত বক্সি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা শোভন-বৈশাখীকে দলে স্বাগত জানাই।”
সাত বছর পর ঘাসফুল শিবিরে প্রত্যাবর্তনে কেমন অনুভূতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের? তিনি বলেন, “যদি আমার শিরা, ধমনি বলেন আর তৃণমূল কংগ্রেস ? আমার নিজের ঘর, নিজের সংসার। আমার আত্মিক যোগ। ঘরের ছেলে হিসাবে পুনরায় শামিল হলাম। রাস্তায় নেমে আন্দোলন করার জন্য। আমার সামর্থ্য মতো তৃণমূলের পাশে থাকব। যেভাবে মমতা, অভিষেক চাইবেন। বক্সিদা চাইবেন। অরূপ আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু। আমার কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। যে দায়িত্ব আমাকে দল থেকে দেওয়া হবে, সেই অনুযায়ী কাজ করব। আমার চেষ্টার কোথাও কোনও ত্রুটি রাখব না। সুন্দর ঘরকে আমার সমগ্র শক্তি দিয়ে আরও শক্তিশালী করে তুলব ? এটা আমার দায়িত্ব, কর্তব্য।”
বলে রাখা ভালো, মাসখানেক আগে প্রশাসনিক পদে ফিরেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। নিউটাউন-কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ বা NKDA-র চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে। তার আগে বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় শোভন ও বৈশাখী তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথাবার্তা, আলোচনা হয়েছে। এরপরই শোভনকে এনকেডিএ-র দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর এবার তাঁর ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। সাত বছর পর ফের ঘাসফুল শিবিরে ফেরা শোভনকে ভোটের অন্যতম সৈনিকের দায়িত্ব দেওয়া হবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
বছর সাতেক আগে, ২০১৮ সালে দলের সঙ্গে দূরত্বের জেরে আচমকাই কলকাতার মেয়র পদ ছেড়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। একইসঙ্গে আরও দুই দপ্তরের মন্ত্রিত্বও ছাড়েন তিনি। ২০১৯ সালে দিল্লি গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। ২০২০ সালে বঙ্গ বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ পদও পান দু’জনে। একুশের বিধানসভা ভোটে তাঁদের তারকা প্রচারকের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিজেপির তরফে। কিন্তু গেরুয়া শিবিরে খুব বেশিদিন থাকেনননি শোভন-বৈশাখী।
তারপর ফের ঘাসফুল শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ে তাঁদের। পুরনো সতীর্থদের কারও কারও সঙ্গে নতুন করে নিবিড় যোগাযোগ তৈরি হয় প্রাক্তন মেয়রের। প্রতি বছর ভাইফোঁটায় অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যাতায়াতে ছেদ পড়েনি। সম্প্রতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন-বৈশাখীর বেশ কয়েকবার ব্যক্তিগত স্তরে কথাবার্তা হয়েছে বলে খবর। এরপর গত মাসে দার্জিলিংয়ের রিচমন্ড হিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয়। তার পরপরই এনকেডিএ-র দায়িত্ব পান শোভন চট্টোপাধ্যায়। এবার ফিরলেন দলে।