• এসআইআর শুরু মঙ্গলবার থেকে! বাড়ি বাড়ি গিয়ে যাচাই করবেন বিএলও-রা, আপনি কী ভাবে বিএলও যাচাই করবেন?
    আনন্দবাজার | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
  • রাজ্য জুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) কাজ শুরু হচ্ছে মঙ্গলবার থেকে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, মঙ্গলবার থেকেই বাড়ি বাড়ি যাবেন বুথ স্তরের অফিসারেরা (বিএলও)। সংশ্লিষ্ট বিএলও-ই ভোটারদের যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে কমিশনে পাঠাবেন। তবে অনেকের মনেই প্রশ্ন, তাঁরা বিএলও চিনবেন কী ভাবে? কার বাড়ি কখন বিএলও যাবেন? যদি সেই সময়ে বাড়িতে কেউ না থাকেন, তবে কি সমস্যা?

    মঙ্গলবার থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম দেবেন বিএলও-রা। সেই ফর্ম পূরণ করার পর তা নিয়ে যাবেন তাঁরা। বিএলও-দের নিয়ে সংশয় দূর করতে, তাঁদের চেনার কিছু উপায় রয়েছে। ফলে ‘ভুয়ো’ বিএলও পাকড়াও করা সম্ভব। মঙ্গলবার থেকে আগামী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বিএলও-রা সংশ্লিষ্ট বুথের সব বাড়িতে যাবেন। এনুমারেশন ফর্ম পূরণ থেকে ভোটারদের থেকে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করবেন তাঁরাই।

    বিএলও-দের কাছে নির্দিষ্ট এলাকার সমস্ত ভোটার সম্পর্কে তথ্য থাকবে। তিনি জানেন ওই এলাকার কে কোথায় থাকেন, কর্মসূত্রে কোনও ভোটার বাইরে থাকেন কি না। তাই বিএলও কোনও এলাকায় যাওয়ার আগে আগাম সেখানে খবর পাঠিয়ে দেবেন। তার পরেও কেউ বা কোনও পরিবার খবর না পেলেও অসুবিধা নেই। বিএলও এক বার নয়, প্রত্যেক এলাকায় প্রয়োজনে তিন-চার বার যাবেন।

    বিএলও চেনার উপায়?

    বিএলও-দের সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য রয়েছে কমিশনের সাইটেই। এ ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে (ecinet) পাওয়া যাবে বিএলও-দের সম্পর্কিত তথ্য। (প্লে-স্টোর বা অ্যাপ্‌ল স্টোর থেকে কমিশনের অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে।) ওই অ্যাপে দু’টি জায়গা রয়েছে— এক, ‘বুক অ্যা কল উইথ বিএলও’ এবং ‘কানেক্ট উইথ ইলেকশন অফিশিয়ালস’। এই দুই বিকল্পের মধ্যে যে কোনও একটিতে গিয়েই নিজের এলাকার বিএলও-দের সম্পর্কে জানা যাবে। তবে এসআইআরের জন্য যিনি আপনার বাড়ি যাবেন, তিনিই ওই বিএলও কি না, তা চেনার সহজ তিনটি উপায় রয়েছে। প্রথমত, প্রত্যেক বিএলও-র কাছে পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) থাকবে। নির্বাচন কমিশনই সংশ্লিষ্ট বিএলও-কে ওই কার্ড দেবে। ওই কার্ডে একটা কিউআর কোড থাকবে। সেই কোড স্ক্যান করলেই জানা যাবে ওই বিএলও সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। বিএলও-র নাম, ফোন নম্বর থাকবে সেখানে। ফলে কমিশনের ওয়েবসাইটে বা অ্যাপে থাকা বিএলওর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যাবে সহজেই।

    দ্বিতীয়ত, বিএলও-দের সঙ্গে থাকবে এসআইআর কিট ব্যাগ থাকবে। কমিশনই ওই কিট ব্যাগ দিয়েছে বিএলও-দের। সোমবারের মধ্যেই সব বিএলওর কাছে ওই কিট ব্যাগ, এনুমারেশন ফর্ম এবং পরিচয়পত্র পৌঁছে গিয়েছে। আর তৃতীয়ত, বিএলও-দের কাছে থাকবে ছাপানো এনুমারেশন ফর্ম। সেই ফর্মই পূরণ করতে হবে ভোটারদের।

    এনুমারেশন ফর্মে ভোটারের নাম, ঠিকানা, এপিক নম্বর, বিধানসভা কেন্দ্র, বুথ এবং পার্ট নম্বর আগে থেকেই ছাপানো থাকবে। এ ছাড়াও, সংশ্লিষ্ট ওই ভোটারের পুরনো ছবিও থাকবে এনুমারেশন ফর্মে। ফর্মের একে বারে ডান দিকের উপরে নতুন ছবি সাঁটার জায়গাও থাকবে। এনুমারেশন ফর্ম নাম, জন্মতারিখ, মোবাইল নম্বর, বাবা-মা বা অভিভাবক কিংবা আত্মীয়ের নাম দিয়ে পূরণ করতে হবে। যে আত্মীয়ের নাম দেওয়া হবে, তাঁর সম্পর্কিত তথ্যও পূরণ করার জায়গা থাকবে ফর্মে। কেউ চাইলে আধার কার্ডের নম্বরও ফর্মে দিতে পারেন। ওই ফর্মের একদম নীচে যিনি ফর্ম পূরণ করছেন, তাঁকে স্বাক্ষর করতে হবে। শেষে বিএলও সই করবেন ওই এনুমারেশন ফর্মে।

    এনুমারেশন ফর্ম পূরণের সঙ্গে সঙ্গেই বিএলও-দের কাছে ১১টি মধ্যে আপনার কাছে যা যা নথি আছে, তা দিতে পারেন। তবে পরেও নথি জমা দেওয়া যাবে। বিএলও গিয়ে সেই নথি নিয়ে আসবেন। বিএলও-রা পূরণ করা এনুমারেশন ফর্মের ছবি পাঠিয়ে দেবেন কমিশনকে।

    ২০০২ সালের এসআইআর করতে অন্তত দু’বছর সময় লেগেছিল, তা হলে এক মাসের মধ্যে কী ভাবে বিএলও-রা সেই কাজ করবেন? এমন প্রশ্নও তুলেছে বিরোধীরা। যদিও কমিশনের দাবি, এক-একটি বুথে ভোটার সংখ্যা মোটামুটি ১২০০। বিএলও-দের কাজ কঠিন নয়। প্রতি দিন গড়ে ১৫-২০টি বাড়িতে গেলেই এক মাসের মধ্যে সমীক্ষার কাজ হয়ে যাবে।

    এসআইআর নিয়ে ভোটারদের মধ্যে হাজার প্রশ্ন। ২০০২ সালের এসআইআর তালিকায় নাম না-থাকলে কী হবে? সেই চিন্তায়ও ভুগছেন অনেকে। যদিও কমিশন জানিয়েছে, চিন্তার কারণ নেই। ২০০২ সালের এসআইআর তালিকায় নিজের নাম বা বাবা-মায়ের নাম থাকলে কোনও নথি দিতে হবে না। তা ছাড়াও ১১টি নথি ব্যতীত নাগরিকত্ব প্রমাণ করার যে কোনও নথি দিলেই তা গ্রাহ্য হবে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)