জাল সিম কার্ড চক্রের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে ছ’জনকে গ্রেফতার করলেন সুন্দরবন পুলিশ জেলার সাইবার অপরাধ শাখার তদন্তকারীরা। পুলিশ জানিয়েছে, দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে ধরা হয়েছে সাকির হোসেন খান, রাকিব সর্দার, সালাউদ্দিন মোল্লা, হাবিবুল খান, শেখ ইসমাইল এবং হৃষিকেশ জানাকে। এদের বাড়ি সাগর, নামখানা-সহ আশপাশের এলাকায়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক মোবাইল ফোন, স্ক্যানার ও বেশ কিছু সিম কার্ড। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারণা, পরিচয় জালিয়াতি ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার অপব্যবহারের ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ভারতীয় সাইবার অপরাধ সমন্বয় কেন্দ্রে জমা পড়া অভিযোগে জানানো হয়েছিল, প্রায় ৬৯৯টি সিম কার্ড অবৈধ নামে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ব্যবহার হচ্ছে। সেগুলির রেজিস্ট্রেশন তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়, বেশির ভাগ সিম কার্ড সুন্দরবনের মানুষদের নাম ও ঠিকানায় চালু হয়েছে। এর পরে কলকাতা সাইবার ক্রাইম শাখা বিষয়টি সুন্দরবন সাইবার ক্রাইম থানায় পাঠায়। তদন্তে উঠে আসে জাল সিম কার্ড চক্রের হদিশ। তার পরেই অভিযান চালিয়ে ছ’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তদন্তকারীরা জানান, ধৃতেরা বাজারে, রাস্তার ধারে বা টোটো করে গ্রামে ঘুরে সিম বিক্রি করত। কেউ সিম নিতে এলেই তাঁর অজান্তে অতিরিক্ত একটি বা দু’টি সিম সেই ব্যক্তির নামেই চালু করে দিত। ভুয়ো নথি দিয়ে চালু করা সেই সিম কার্ড অন্যত্র ১০০০ থেকে ৫০০০ টাকায় বিক্রি করা হত। সেই সিম কার্ড নানা অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার হত বলে অভিযোগ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, সাধারণ মানুষ নিজের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে যথেষ্ট সতর্ক নন। ফলে সেই তথ্য ব্যবহার করেই ভুয়ো সিম কার্ড চালু করে প্রতারণার জাল ছড়াচ্ছে। সুন্দরবন সাইবার ক্রাইম থানার এক আধিকারিক জানান, এ ধরনের প্রতারণা মূলত আর্থিক জালিয়াতি গোপন রাখতেই চালানো হচ্ছে। চক্রের আরও সদস্যদের খোঁজ চলছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, “মানুষ নিজের তথ্য নিয়ে কতটা অসচেতন, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। আমরা এই চক্রের বড় অংশ ভেঙে ফেলেছি। ব্যক্তিগত তথ্য কাউকে দেবেন না, এটাই সব থেকে বড় সচেতনতা। আমরা বিভিন্ন এলাকায় সাইবার সচেতনতা শিবির করে থাকি মানুষকে সচেতন করার জন্য। তা আরও বাড়ানো হবে।”