• টাইপ-১ ডায়াবিটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পথ দেখাচ্ছে বাংলা! হাভার্ডের বিশেষজ্ঞের প্রশংসা পেয়ে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী
    আনন্দবাজার | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
  • শিশু ও কিশোরদের টাইপ-১ ডায়াবিটিস চিকিৎসায় অত্যাধুনিক মানের স্বাস্থ্য মডেলের জন্য আগেই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলা। মাস কয়েক আগে ‘ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড অ্যাডোলেসেন্ট ডায়াবেটিস’ (আইএসপিএডি) ২০২৫ সালের জন্য বেছে নেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। এ বার ডায়াবিটিসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলার ‘মডেল’ সারা বিশ্বে অনুকরণীয় বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার সমাজমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি এসএসকেএমে এসেছিলেন হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক জিন বুখম্যান। সংক্রামক নয়, এমন সমস্ত রোগের বিশেষজ্ঞ হিসাবে সারা বিশ্বে সুনাম অর্জন করা চিকিৎসক টাইপ-১ ডায়াবিটিস রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলার উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

    ডায়াবিটিস এমন একটি রোগ, যা একা আসে না, পাশাপাশি হরেক সমস্যা ডেকে আনে। বিশেষজ্ঞেরা বলেন, বর্তমানে মানুষের জীবনযাত্রার অনিয়ম ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এই রোগের আশঙ্কা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আগে অনেকে মনে করতেন, চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের ক্ষেত্রে উপসর্গ না থাকলেও প্রতি বছর ডায়াবিটিস পরীক্ষা করা প্রয়োজন। আমেরিকান ডায়াবিটিস অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তিন দশক আগেও শিশু ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে যে রোগ ছিল অত্যন্ত বিরল, এখন তাতেই আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে কমবয়সিদের। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলছে, ভারতে প্রতি ১০টি শিশুর মধ্যে এক জনের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

    ডায়াবিটিস রোগ মূলত দুই ধরনের হয়, টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ ১ ডায়াবিটিস মূলত জিনগত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। একে অটোইমিউন রোগ বলা হয়। অগ্ন্যাশয়ে অবস্থিত ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাওয়ার ফলে যখন মানুষের শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়, সে অবস্থাকে বলা হয় টাইপ-১ ডায়াবিটিস। তবে দুই ধরনের ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে লক্ষণ মোটামুটি এক। যেমন, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা এবং রাতের দিকে যে সমস্যা বেশি হয়। তার পর রয়েছে বার বার গলা শুকিয়ে আসা, অধিক ক্লান্ত অনুভব করা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া এবং কাটা-ছেড়া শুকোতে বেশি সময় লাগা ইত্যাদি।

    জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে প্রতিটি জেলার এনসিডি বা নন-কমিউনিকেবল ডিজ়িস ক্লিনিকে ডায়াবিটিসের চিকিৎসা পরিষেবা চালু হয়েছে। প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্সদের দ্বারা পরিচালিত ক্লিনিকে দেওয়া হয় বিনামূল্যে ইনসুলিন, ব্লাড গ্লুকোজ মনিটরিং কিট ইত্যাদি। এ বিষয়ে বাংলা এগিয়ে। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, টাইপ-১ ডায়াবিটিসের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘বাংলার মডেল’ বিশ্বব্যাপী অনুকরণীয় মডেল হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক জিন বুখম্যান, যাঁকে এনসিডি-র একজন বিশেষজ্ঞ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তিনি আমাদের এসএসকেএম হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন এবং আমাদের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। কারণ, এটি দেশের প্রথম জাতীয় ভাবে পরিচালিত একটি কর্মসূচি। এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)