• কলকাতায় ফুটবল গড়াপেটাকাণ্ডে ধৃত দুই! ম্যাচের ফলাফল স্থির হত আগেই, বিদেশেও টাকা লেনদেন? তদন্তে লালবাজার
    আনন্দবাজার | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
  • কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগের তদন্তে দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের নাম আকাশ দাস এবং রাহুল সাহা ওরফে রাজ। আকাশ খিদিরপুর ক্লাবের ‘টিম ম্যানেজার’ হিসাবে কর্মরত। রাহুল ওই ক্লাবেরই ‘মিডিয়া ম্যানেজার’।

    কলকাতা লিগের প্রিমিয়ার ডিভিশনে দু’টি ক্লাবের নাম জড়িয়েছিল ম্যাচ গড়াপেটায়। তার মধ্যে একটি খিদিরপুর ক্লাব। গত বেশ কয়েক মাস ধরে ওই ম্যাচ গড়াপেটার তদন্ত চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশ। এ বার ওই তদন্তের সূত্র ধরেই খিদিরপুর ক্লাবের সঙ্গে জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করা হল। সোমবার দুপুরে লালবাজার থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়, ‘ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন’ থেকে কলকাতা পুলিশ একটি অভিযোগ পেয়েছিল। তাদের সন্দেহ ছিল, কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে কিছু ব্যক্তি ম্যাচ গড়াপেটা করে খেলার ফলাফল স্থির করে ফেলছেন। এর মাধ্যমে একটি বেটিংচক্র চালিয়ে অভিযুক্তেরা মোটা টাকা উপার্জন করছেন বলে পুলিশকে জানানো হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করে।

    তদন্ত চলাকালীন অনেকের উপর নজরদারি চালানো হয়। অনেকের সঙ্গে কথাও বলে পুলিশ। সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন ডিজিটাল তথ্যও। সেই সূত্র ধরে এই দু’জনের দিকে সন্দেহ যায় পুলিশের। লালবাজার থেকে জানানো হয়, রবিবার এফআইআর দায়ের করে অভিযুক্ত এই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর এবং বেলঘরিয়া থেকে ওই দু’জনকে পাকড়াও করা হয়েছে।

    প্রাথমিক জেরায় দু’জনেই গড়পেটার অভিযোগ আংশিক মেনে নিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া আরও কয়েক জনের নামও পুলিশকে জানিয়েছেন ধৃতেরা। তবে কাদের নাম জেরায় উঠে এসেছে, সে বিষয়ে লালবাজার থেকে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।

    পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত এখন প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সোমবার অভিযুক্তদের আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানাবে পুলিশ। হেফাজতে নিয়ে অভিযুক্তদের জেরা করে আরও তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মোট কতগুলি ম্যাচ গড়াপেটা করা হয়েছে, আরও কারা জড়িত— সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

    লালবাজার থেকে সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ জানায়, আকাশ এবং রাহুল— উভয়ের সঙ্গেই বেটিংচক্রের সরাসরি যোগ ছিল। তাঁরা কয়েক জন খেলোয়াড়কে ‘ফিক্স’ করেছিলেন। ম্যাচের ফলাফল কী হবে, তা আগে থেকে ঠিক করে ‘ফিক্সিং’ করা হত বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কত টাকার বিনিময়ে খেলোয়াড়দের ‘ফিক্স’ করা হত, তা এখনই প্রকাশ্যে আনেনি লালবাজার। তবে ম্যাচ গড়াপেটাকাণ্ডে বিদেশেও টাকা লেনদেহ হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর।

    সোমবার আকাশের গ্রেফতারির খবর প্রকাশ্যে আসার পরে আনন্দবাজার ডট কম ফোনে যোগাযোগ করেছিল খিদিরপুর ক্লাবের সচিব অমিতাভ বিশ্বাসের সঙ্গে। তবে এ বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)