• প্রতিমার কাঠামো ও খড়ে দুরবস্থা গঙ্গার ঘাটের, পুর তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন
    আনন্দবাজার | ০৩ নভেম্বর ২০২৫
  • পাড় জুড়ে ভাঙা প্রতিমার সারি। কোনওটি থেকে মাটি,খড় খসে গঙ্গার জলে মিশছে। কোনওটি আবার জোয়ারের জলের তোড়ে গলে গিয়েছে। একই অবস্থা স্নানের ঘাটগুলিতেও।সেখানেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো থেকে শুরু করে ফুল, মালা-সহ নানা আবর্জনা। পরিস্থিতি এমন যে, ঘাট না কিআবর্জনার স্তূপ, তা এক নজরে বোঝা দায়!

    উত্তর থেকে দক্ষিণ, গঙ্গার ঘাটের পাশে সর্বত্র এক ছবি। কালীপুজোর বিসর্জনের পর প্রায় ১০ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু গঙ্গার পাড় জুড়ে এখনও রয়ে গিয়েছে প্রতিমার কাঠামো থেকে শুরুকরে ভাঙা মূর্তি। এর সঙ্গে জগদ্ধাত্রী প্রতিমার কাঠামোও যুক্ত হওয়ায় জল-জঞ্জালে আরও ভয়াবহ হয়েছে গঙ্গাপাড়ের পরিস্থিতি।দীর্ঘ দিন ধরে গঙ্গার পাড় বরাবর এ ভাবে কাঠামো পড়ে থাকায় সেগুলি ঘিরে মশার উপদ্রব বাড়ছে বলেও অভিযোগ। এমনকি,ডেঙ্গির আশঙ্কাও বাড়ছে বলে অভিযোগ করছেন বাসিন্দারা। স্থানীয়দের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, দুর্গাপুজোর প্রতিমাবিসর্জন এবং কাঠামো তুলতে পুর তৎপরতা দেখা গেলেও অন্যান্য পুজোর ক্ষেত্রে সেই তৎপরতা থাকে না কেন?

    রবিবার উত্তরের নিমতলা, আহিরীটোলা, কুমোরটুলি,বাগবাজার ঘাট থেকে শুরু করে দক্ষিণে বাবুঘাট, বিচালিঘাট— সর্বত্র ঘুরে একই ছবির দেখা মিলেছে। এ দিন নিমতলা ঘাটে গিয়েদেখা গেল, কংক্রিটের বাঁধানো অংশে স্নানের জায়গাটুকুও অবশিষ্ট নেই। পাড়েই পড়ে রয়েছে প্রতিমার কাঠামো। জোয়ারেরজলে ভেসে আসা আবর্জনা ঘাটে রাখা কাঠামোর সঙ্গে আটকে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও সঙ্গিনহয়েছে। পাড় জুড়ে যত্রতত্র পড়ে কাঠামো ও ভাঙা মূর্তি।

    একই অবস্থা আহিরীটোলা, বেনিয়াটোলা ঘাটেও। কোথাও পাড়ে থাকা গাছের গোড়ায় ভাঙা প্রতিমা পড়ে, কোথাওপ্রতিমা রাখা রয়েছে জলের ধারে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খড়, ফুল, মালা থেকে শুরু করে অন্যান্য আবর্জনা। দীর্ঘদিন ধরে ঘাটগুলিতে এ ভাবেকাঠামো পড়ে থাকায় জোয়ারের জলে ভেসে আসা মৃতপশুর দেহাংশও আটকে থাকছে বলে অভিযোগ করেছেনস্থানীয়েরা।

    অনিমেষ ভট্টাচার্য নামে আহিরীটোলার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর পরেজল থেকে কাঠামো তুলে নিতে, ঘাট পরিষ্কার করতে পুরসভা তৎপর ছিল। কিন্তু কালীপুজো, লক্ষ্মীপুজোয় সেই তৎপরতা দেখা যায়নি।কালী প্রতিমা বিসর্জনের পরে জল থেকে কাঠামো তোলা হলেও পাড় থেকে অধিকাংশ কাঠামো সরানো হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরেসেগুলি এ ভাবে পড়ে থাকায় কাঠামোগুলিই এখন মশারডিম পাড়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে।’’

    কলকাতা পুরসভা যদিও প্রতিমার কাঠামো সরানো হয়েছে বলে দাবি করছে। পুরসভার বিশেষ দলএই কাজ করেছে বলে কর্তাদের দাবি। তবে এর পরেও গঙ্গার পাড়ে এ ভাবে কাঠামো পড়ে থাকার জন্য কুমোরটুলির পটুয়াদেরএকাংশকেই দায়ী করছেন পুরকর্তারা। তাঁদেরই একাংশ জল থেকে কাঠামো তুলে ঘাটেই বেঁধেরাখায় ওই জায়গায় বেশি আবর্জনা জমা হচ্ছে বলে দাবি। মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বললেন,‘‘অধিকাংশ ঘাট থেকেই পুরকর্মীরা প্রতিমার কাঠামো সরিয়েছেন। দুর্গা এবং কালী প্রতিমা বিসর্জনের সময়েবিশেষ দলও কাজ করেছে। তবে তার পরেও যদি কাঠামো থেকে থাকে, তা হলে দ্রুত আবারকর্মীদের পাঠিয়ে তা সরানোর ব্যবস্থা করা হবে।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)