কলকাতায় বাইপাসের ধারে পাসপোর্ট অফিসের সামনেই কি চলে পাসপোর্ট দুর্নীতি চক্র! সোমবার পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের সামনে এক অনলাইন আবেদনকেন্দ্রে তল্লাশি চালাল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পাসপোর্ট দফতরে গিয়েও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলে ইডি সূত্রে খবর। পাসপোর্ট দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে নেমেছে ইডি। সেই তদন্তে সোমবার নদিয়াতেও তল্লাশি চালিয়েছেন তদন্তকারীরা।
পাসপোর্ট দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্তে নেমে আজ়াদ মল্লিক নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের যোগসূত্র মিলেছিল। অভিযোগ, আজ়াদ বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসে থেকে গিয়েছিলেন। পরে তাঁর কাছ থেকে পাকিস্তানের নথিও পাওয়া যায়। ইডি জানিয়েছিল, আজ়াদ কাঁচরাপাড়ার একটি ক্যাফে থেকে ১২-১৩ হাজার টাকার বিনিময়ে ভুয়ো পাসপোর্ট বানানোর কাজ করতেন। কখনও কখনও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকাও দাবি করা হত। পাসপোর্টের পাশাপাশি অন্যান্য নথি ও পরিচয়পত্র বানানোর কাজও করতেন তিনি। তাঁর মোবাইলেও এ সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ভুয়ো নথি ব্যবহার করে জাল পাসপোর্ট বানানোর এই চক্রের ‘মিডলম্যান’ হিসাবে কাজ করতেন আজ়াদ। সেই আজ়াদের সূত্র ধরে পরে তাঁর সহযোগী, চাকদহের বাসিন্দা ইন্দু ভূষণকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার নদিয়ায় চাকদহে এক কাঠমিস্ত্রির বাড়িতে হানা দেয় ইডি। বাড়ির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, চাকদহের পড়ারি গ্রামের বাসিন্দা ওই কাঠমিস্ত্রির নাম বিপ্লব সরকার। সোমবার সকালে বিপ্লব ও তাঁর ভাইয়ের বাড়িতে হাজির হয় তদন্তকারী দল। পরে দুই ভাই-সহ আরও এক জনকে আটক করা হয়। ধৃতদের নাম বিপ্লব, বিনন্দ সরকার এবং বিপুল সরকার। ইডি সূত্রে খবর, নদিয়া থেকে এক জনকে কলকাতায় ইডির দফতরে নিয়ে আসা হয়েছে।
গত বছরের শেষে ভুয়ো নথি দাখিল করে পাসপোর্ট তৈরির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পাসপোর্ট তৈরির একটি চক্রের কথা জানতে পারে কলকাতা পুলিশ। গ্রেফতার হন ১০ জন। এর পরেই জানা যায়, রাজ্য জুড়ে এই চক্রের উপস্থিতি রয়েছে। পরে এই মামলার তদন্তভার হাতে নেয় ইডি।