• ডাবল ইঞ্জিন ত্রিপুরায় অবাধে চলছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশ! টাকা দিলেই সীমান্ত পারের ছাড়পত্র!
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • বিশেষ সংবাদদাতা, আগরতলা: পাসপোর্ট নয়, হাতে দু’এক হাজার টাকা থাকলেই অবাধ অনুপ্রবেশ। বাংলাদেশ থেকে সহজেই ত্রিপুরায় ঢুকে পড়া যায়। ত্রিপুরায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত  ৮৫৭ কিলোমিটারের। তারমধ্যে ২৬ কিলোমিটার ছাড়া বাকি অংশে রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া। তাতে কিন্তু অনুপ্রবেশ আটকাচ্ছে না বলে অভিযোগ। এজন্য স্থানীয়দের অভিযোগ ভারতীয় সীমান্ত রক্ষাবাহিনীর বিরুদ্ধে। 

    বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার খোয়াই, সোনামুড়া, মধুপুর, কমলাসাগর, বিলোনীয়া, সাব্রুম সহ বিভিন্ন সীমান্ত এলাকাগুলিই মূলত অনুপ্রবেশের করিডর। গত ১৫ দিনে শুধুমাত্র খোয়াই থানার পুলিশের হাতেই ধরা পড়েছে ২২ জন বাংলাদেশি। এক্ষেত্রে একটি বিশাল দালালচক্র কাজ করছে বলে অভিযোগ। গত বৃহস্পতিবার রাতে করঙ্গীছড়া সীমান্ত এলাকা দিয়ে ১১ জন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে আসে। অভিযোগ, ওই অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে মাথা পিছু দু’ হাজার টাকা করে আদায় করে স্থানীয় গ্রামের শঙ্কু দাস নামে এক যুবক। অটো রিকশ করে তাদের শহরে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল সে। মাঝপথে সোমবাড়িয়া বাজারে  সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয়রা দুটি অটো রিকশ আটক করেন। উত্তেজিত জনতা দুই অটোচালককে মারধর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। সঙ্গে মহকুমা পুলিস আধিকারিক। দালালচক্রের মাধ্যমে এভাবে অনুপ্রবেশ নিয়ে পুলিশের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়রা। পুলিশের হাতে আটক দুই অটোচালকই জানান,  শঙ্কু দাস বাংলাদেশিদের খোয়াই শহরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ১০০০ টাকা করে ভাড়া দেয় তাদের। অটোর ৬ যাত্রী জানয়, তারা বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং হবিগঞ্জের বাসিন্দা। 

    বাকি পাঁচ যাত্রীর অবশ্য দাবি, তারা ভারতীয়। অসম ও ত্রিপুরার বাসিন্দা। বাংলাদেশে গিয়ে সেখান থেকে দু’হাজার টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ভারতে পৌঁছছেন। যদিও পুলিস তাদের উপর নজর রাখছে বলে জানা গিয়েছে।  পুলিশ ধৃত বাংলাদেশিদের পরিচয় জানিয়েছে। তারা হল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা মনি রানি দাস (৩০), তার মেয়ে মহিমা দাস (৮), পিয়াসা দাস (৩), দীপন দাস (৩০), হৃদয় দাস (২৮) এবং  হবিবগঞ্জের গোপাল দাস (৪১)।  জেলা পুলিশ সুপার রানাদিত্য দাস জানিয়েছেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশ সংক্রান্ত মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি দুই অটো চালকের বিরুদ্ধেও সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা হয়েছে। 

    ত্রিপুরার বিভিন্ন সীমান্তে অনুপ্রবেশের সমস্যা নিয়ে কয়েকমাস আগেই মুখ্যমন্ত্রী  মানিক সাহা, বিএসএফ সহ সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। তারপরও অনুপ্রবেশে লাগাম টানা যাচ্ছে না।
  • Link to this news (বর্তমান)