বাড়িতে কেউ না থাকলে ৩ বার যান, বিএলওদের নির্দেশ ডিএমের
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকেই ইনিউমারেশন ফর্ম হাতে বিএলওরা ভোটারদের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়বেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিটি বাড়িতেই স্থানীয় বিএলওদের পৌঁছতে হবে। প্রশ্ন উঠছে, যদি কোনও একটি বাড়ির সদর দরজায় তালা থাকে, পরিবারের কোনও সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ না হতে পারে। সেক্ষেত্রে কী হবে? জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে ভোটারদের অবশ্য চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। এধরনের ঘটনা ঘটলে বিএলও পরপর তিনবার নির্দিষ্ট ওই বাড়িতে যাবেন। তেমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে কোনও মূল্যে নির্দিষ্ট পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করে ইনিউমারেশন ফর্ম তুলে দিতে হবে। এছাড়া কোনও বিএলও কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন কি না, সেবিষয়েও জেলা প্রশাসনের তরফে নজরদারি চলবে।
জেলাশাসক কোনথাম সুধীর বলেন, ভোটার তালিকায় নাম তোলা নিয়ে জেলাবাসীর চিন্তার কোনও কারণ নেই। একজন যোগ্য ভোটারও বাদ পড়বেন না। কোনও ক্ষেত্রে প্রথমদিন বিএলও কাউকে না পেলে তাঁকে পরপর তিনদিন যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশনের তরফে রাজ্যে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন অর্থাৎ এসআইআর ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল। ইতিমধ্যে জেলার ২০টি ব্লকের ২ হাজার ৫২৯ জন বিএলওকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। শেষ ধাপে সোমবার জেলার পুরুলিয়া-২, ঝালদা-১, আড়ষা, পুঞ্চা, জয়পুর, পাড়া, কাশীপুর সহ ১৪টি ব্লকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলে। প্রশিক্ষণ পর্বে মূলত ইনিউমারেশন ফর্ম ফিলআপের প্রসঙ্গে বিস্তারিত পাঠ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে বিএলও অ্যাপ নিয়ে প্রযুক্তিগত পাঠও দেওয়া হয়েছে। জেলার প্রতিটি ব্লকের বিএলওদের হাতে পর্যাপ্ত ইনিউমারেশন ফর্মও পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এদিন সকাল থেকেই সেই ফর্ম হাতে বিএলওরা নির্দিষ্ট এলাকার ভোটারদের বাড়ি যাওয়া শুরু করবেন।
শান্তিপূর্ণভাবে এসআইআর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। একজন যোগ্য ভোটারের নাম যাতে কোনওভাবে বাদ না পড়ে সেদিকে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়োজন অনুসারে বিএলওরা স্থানীয় বিএলএ-২দের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। তবে কোনও ক্ষেত্রে বিএলওদের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে সেক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কোনও ক্ষেত্রে বিএলওদের নিরাপত্তা ইশ্যুতে প্রশ্ন উঠলে জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক পুলিশ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও জানা গিয়েছে।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাত বলেন, বিধানসভা ভোটের পূর্বে এই এসআইআর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সোমবার থেকেই প্রতিটি বুথের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএলএ-২রা বাড়ি বাড়ি যাওয়ার কাজ শুরু করেছেন। সেইসঙ্গে আমাদের দলের কর্মীদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। যাতে একজন ভোটারেরও নাম বাদ না যায়।
পুরুলিয়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি শঙ্কর মাহাত বলেন, জেলাবাসীর ভয়ের কোনও কারণ নেই। একজন ভারতীয় নাগরিকেরও নাম বাদ যাবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অযথা কেউ কেউ গুজব ছাড়াচ্ছেন। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে চাপে পড়ে বিএলও ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না, তার উপর আমরা নজরদারি চালাব।