বোমার তথ্য পেতে বিশেষ নম্বর চালু! সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রচার পুলিশের
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: বোমা বিস্ফোরণ ও মজুতের বাড়বাড়ন্ত বন্ধে এবার নজিরবিহীন পদক্ষেপ করল মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। বোমা বাঁধার কারিগর ও বিস্ফোরক পদার্থের খোঁজ দিতে পারলে পুলিশ আধিকারিকরা ইনফরমারদের পুরস্কৃত করবেন। এজন্য একটি ফোন নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই নম্বরে ফোন করার পাশাপাশি হোয়াটসআপেও তথ্য দিতে পারবেন সাধারণ মানুষ। বিনিময়ে গোপনীয়তা বজায় রেখে নগদ পুরস্কারও দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই ওই নম্বরে ফোন আসতে শুরু করেছে।
সাধারণত গ্রামগঞ্জে জনমানবহীন এলাকায় রাতের অন্ধকারে বোমা বাঁধে দুষ্কৃতীরা। সেই খবর পেতে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়। তাই বোমার কারিগরদের বাগে আনতে পুলিশ এমন অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারা তথ্য দিচ্ছেন, সেবিষয়ে পুলিশের তরফে গোপনীয়তা বজায় রাখা হবে।
পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, সম্প্রতি ডোমকল, সাগরপাড়া ও রেজিনগরে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। দু’জন প্রাণ হারিয়েছেন। জেলায় পরপর বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা দেখে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা লাগাতার অভিযান চালাচ্ছি। মামলা দায়ের করে বোমা বাঁধার কারিগরদের ধরা হচ্ছে। ইতিমধ্যে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তাতে জেলার সমস্ত বোমা মজুতকারী ও কারিগরদের নাম আছে।
জেলা পুলিশ জানিয়েছে, ওই বিশেষ ফোন নম্বর সহ পোস্টটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার পর থেকে বহু মানুষ ফোন করে যোগাযোগ করছেন। কোনও ব্যক্তির দেওয়া তথ্য অনুসারে অভিযান চালিয়ে যদি বোমা বা বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার হয়, সেক্ষেত্রে গোপনীয়তা বজায় রেখে জেলা পুলিশ ওই ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করবে।
ওই বিশেষ নম্বরের ফোনটি মুর্শিদাবাদ পুলিশ সুপারের অফিসে থাকছে। সরাসরি ক্রাইম বিভাগের ওসি ওই ফোন ধরছেন। তাঁকেই বোমার তথ্য দিতে হবে। তিনি সেই তথ্য পেয়ে পুলিশ সুপার কিংবা অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নির্দেশমতো পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন। নম্বরটি চালু করার কয়েকঘণ্টা পর থেকেই ফোন আসতে শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ ফোন করে জানতে চাইছেন, এই নম্বরটি সঠিক কিনা। তারপর নম্বরটি সেভ করে রাখছেন অনেকেই। জেলার প্রতিটি থানা এলাকায় এই নম্বর সহ পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলায় এর আগে একাধিকবার বাইরে থেকে বিস্ফোরক পদার্থ এনে বোমা বাঁধার ঘটনা ঘটেছে। পাইপের দোকান থেকে কেনা সকেটে বিস্ফোরক ভরে ওই বোমা বানানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে কোনও ফাঁকা মাঠে বা নদীর ধারে, বাগানের মধ্যে এধরনের বোমা তৈরি করা হয়। এবার থেকে স্থানীয়রা দুষ্কৃতীদের কোথাও বোমা বাঁধতে দেখলেই যাতে পুলিশকে জানাতে পারেন, সেজন্য এই নম্বর প্রচার করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) রাসপ্রীত সিং বলেন, সাধারণ মানুষের থেকে তথ্য সংগ্রহে ওই নির্দিষ্ট নম্বর চালু করা হয়েছে। সেই নম্বরে যে কোনও মানুষ ফোন করে জানাতে পারেন, এলাকার কোথাও কোনও বোমা মজুত রাখা আছে কিনা বা বোমা বাঁধা হচ্ছে কিনা। যিনি খবর দেবেন, তাঁর পরিচয় আমরা সম্পূর্ণরূপে গোপন রাখব।