সাইকেল, বাইক, বাসে পর পর ধাক্কা বেপরোয়া গাড়ির, তমলুকে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত ১
বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: বেপরোয়া প্রাইভেট গাড়ির পর পর ধাক্কায় তমলুকের রাধামণিতে প্রাণ হারালেন একজন। জখম হলেন আরও চারজন। সোমবার সকালে ওই দুর্ঘটনার জেরে কোলাঘাট-হলদিয়া জাতীয় সড়কে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়। বেপরোয়া ওই গাড়ির ধাক্কায় বাইক ফুটবলের মতো উড়ে গিয়ে রাধামণি বাসস্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মহিলা কর্মীকে সজোরে ধাক্কা মারে। তিনি মারাত্মক চোট পান। তারপর গাড়িটি হলদিয়ার দিকে পালানোর চেষ্টা করে। তমলুকের কাঁকগেছিয়া এলাকা থেকে পুলিশ গাড়িটিকে আটকায়। গ্রেফতার করা হয় চালককেও। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এদিন সকাল ৯টা নাগাদ তমলুকের পদুমপুরের সোমনাথ ভট্টাচার্য(৪৫) তাঁর ১৪বছরের ছেলেকে সাইকেলে চাপিয়ে রাধামণি সবজি মার্কেট থেকে বাজার সেরে জাতীয় সড়কে ওঠেন। সেই মুহূর্তে হলদিয়াগামী ওই প্রাইভেট গাড়ি সাইকেলে ধাক্কা মারে। সোমনাথবাবু ও তাঁর ছেলে সৌম্যজিৎ রাস্তায় ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই সোমনাথবাবুর মৃত্যু হয়। তাঁর ছেলে জখম হয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আরও গতি বাড়িয়ে চালক হলদিয়ার দিকে পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় রাধামণি বাসস্টপের আগে এক বাইক চালককে ধাক্কা মারে বেপরোয়া গাড়িটি। বাইক চালক ছিটকে পড়েন। দ্রুতগতির ঘাতক গাড়িটির ধাক্কায় বাইকটি উড়ে গিয়ে বাসস্টপে দাঁড়িয়ে থাকা মধুস্মিতা সেনকে ধাক্কা মারে। ওই যুবতী এসবিআইয়ের রাধামণি শাখার ক্যাশিয়ার। তিনি জাতীয় সড়ক পারাপার করে উল্টোদিকে ব্যাঙ্কে যাওয়ার জন্য বাসস্টপে অপেক্ষা করছিলেন। বাইকের ধাক্কায় তিনি গুরুতর জখম হন।
জানা গিয়েছে, বেপরোয়া ওই গাড়ি বাইক চালককে ধাক্কা মারার পরই নিয়ন্ত্রণ হারায়। এরপর রাধামণি ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে একটি বেসরকারি বাসের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। তাতে ঘাতক গাড়ির এয়ারব্যাগ খুলে যায়। এরপর ওই বাসের ড্রাইভার প্রাইভেট গাড়ির পথ অবরুদ্ধ করতে আড়াআড়িভাবে বাসটিকে দাঁড় করিয়ে দেন। বেপরোয়া চালক প্রাইভেট গাড়িটিকে ডিভাইডারে তুলে সিগন্যাল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করে। ডিভাইডারে গাড়ি তুলতে গিয়ে চাকা ফেটে যায়। ওই অবস্থায় কাঁকগেছিয়া পর্যন্ত গিয়ে সেখানে এক টোটো চালককে ধাক্কা মারে। এরপর পুলিশ গাড়িটির পিছু নেয়। শেষমেশ কাঁকগেছিয়া এলাকায় ঘাতক গাড়িটি আটক করা হয়। গাড়ির সামনের চাকা ফেটে চৌচির। তারপরও চালক গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। তমলুক থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। ঘাতক গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। রাধামণির প্রশান্ত বেরা, স্থানীয় গাড়ির ড্রাইভার আলি আহমেদ গায়েন প্রমুখ দুর্ঘটনায় জখমদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। আলি আহমেদ বলেন, প্রাইভেট গাড়ির চালক বেপরোয়া গতিতে পালানোর সময় পরপর দুর্ঘটনা ঘটে। জখমদের উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠাই।