• জাল বার্থ সার্টিফিকেট বৈধ করতে এসে ধৃত
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: এসআইআর আবহে অবৈধ জন্ম সার্টিফিকেট বৈধ করার জন্য তমলুক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল এক যুবক। ধৃতের নাম কিশোর ধাড়া। বাড়ি তমলুক থানার পদুমপুর গ্রামে। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ সে  হাতে লেখা একটি বার্থ সার্টিফিকেট ডিজিটাল কপি বানাতে তমলুক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সেখানে পরীক্ষা করে দেখা যায়, হাসপাতালের নকল সিল ও চিকিৎসকের ভুয়ো সই ব্যবহার করে ওই সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়েছে। এরপরই হাসপাতাল থেকে থানায় ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। হাসপাতাল সুপার এনিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরই কিশোরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তমলুক থানার পুলিশ ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে ভূতুড়ে বার্থ সার্টিফিকেট তৈরির চক্রের শিকড়ে পৌঁছতে চাইছে।

    জানা গিয়েছে, ২০০২সালের ভোটার তালিকায় কিশোরের নাম নেই। তাই এবার এসআইআর নিয়ে তাঁর মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। কিশোরের কাছে একটি হাতে লেখা জন্ম সার্টিফিকেট ছিল। সেটি কম্পিউটারাইজ করার জন্য সে সোমবার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সেখানে জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট সেকশনে তাঁর বার্থ সার্টিফিকেটের নম্বর চেকিং করে দেখা যায় সেটি জাল। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি থানায় জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ অফিসার শৈবাল মাইতি হাসপাতালে পৌঁছন। হাসপাতালের সুপার মৃণালকান্তি কুণ্ডু এনিয়ে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরই পুলিশ হাসপাতাল থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।

    এসআইআর আবহের মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরে বিভিন্ন জায়গায় ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট তৈরির চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। কয়েকদিন আগে রামনগর-১ ব্লকের বসন্তপুর পঞ্চায়েত এলাকার শেখ হায়দার তাঁর মেয়ে রিজিয়া খাতুনের ম্যানুয়াল বার্থ সার্টিফিকেট ডিজিটাইজ কপি বের করতে দীঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, ওই সার্টিফিকেট জাল। হাসপাতালের পক্ষ থেকে দীঘা কোস্টাল থানায় এফআইআর করা হয়। তারপরই নকল জন্ম সার্টিফিকেট তৈরির চক্রের কিংপিন স্থানীয় কইনাড়া গ্রামের খগপতি জানা সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসআইআর পর্বের মধ্যেই রামনগরের গাংপুরা গ্রামে মোটা টাকার বিনিময়ে ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট বানানো হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে।

    ম্যানুয়াল বার্থ সার্টিফিকেটের ডিজিটাল কপি বের করতে হাসপাতালে ভিড় জমছে। অনেকেই বার্থ সার্টিফিকেট জমা করে এসআইআর ভীতি দূর করতে চা‌঩ইছেন। কিন্তু, সেই কাজ করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, সার্টিফিকেট জাল। টাকার বিনিময়ে তা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্যদপ্তরও সরাসরি থানা-পুলিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তমলুক মেডিকেলের ক্ষেত্রেও সরাসরি থানায় এফআইআর করা হয়েছে। 

    তমলুক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাডিশনাল মেডিকেল সুপার ভাস্কর বৈষ্ণব বলেন, বার্থ সার্টিফিকেটের বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পরই এমএসভিপি থানায় এফআইআর করেন। তারপর পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে। তমলুক থানার পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তমলুক থানার পুদমপুরের ওই বাসিন্দাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার আদালতে পেশ করা হবে। হেফাজতে নিয়ে কীভাবে ওই সার্টিফিকেট পেল, তা জানা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)