• ২০০২-এর তালিকা থেকে উধাও ৫৫ আদিবাসীর নাম, রামপুরহাটে গরমিলের অভিযোগ
    বর্তমান | ০৪ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: আজ, মঙ্গলবার থেকে বাড়ি বাড়ি যাবেন বিএলও তথা বুথ লেভেল অফিসাররা। এরই মধ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা থেকে রামপুরহাট বিধানসভার মাসড়া অঞ্চলের ২০১ নম্বর পার্টের ৫৫জন আদিবাসী ভোটারের নাম উধাও হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এসআইআর আবহে নাম বাদ পড়া প্রবীণ থেকে মধ্য বয়সি সকলের মধ্যেই দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছে তাঁদের। এনিয়ে ওই পার্টের বিএলও রুপালি মার্ডি ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার তথা রামপুরহাটের মহকুমা শাসক ও বিডিওকে অভিযোগ জানিয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা শাসক রাঠোর অশ্বিনী বাবু সিং।

    মাসড়া অঞ্চলের ২০১ নম্বর পার্টের ভোটাররা ভোট দিয়ে আসছেন তাঁতবাঁধা জুনিয়র বেসিক স্কুলের বুথে। এই পার্টের মোট ভোটার সংখ্যা ৬৫১জন। অভিযোগ, এসআইআর নিয়ে যখন হইচই শুরু হয়, তখন নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সকলেই তাঁদের নাম দেখতে পান। কিন্তু, কমিশন সদ্য যে ভোটার তালিকা ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে তাতে নাম রয়েছে ৫৯৭জনের। অর্থাৎ, ৫৫জন ভোটারের নাম নেই। মাসড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান দিলীপ কিস্কু বলেন, আদিবাসীরাই মূলবাসী। অথচ তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়া সকলেই ২০০২ এর আগে ও পরে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম ছিল। হঠাৎ করে নাম বাদ চলে যাওয়ায় তাঁরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। ভুল করে আপলোড করা হয়নি, নাকি পরিকল্পনামাফিক চক্রান্ত বুঝতে পারছি না। প্রশাসনিক স্তরে বিষয়টি জানানো হয়েছে। ঘটনায় এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দিশম আদিবাসী গাঁওতার নেতা রবিন সোরেন বলেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নামগুলি বাদ দেওয়া হচ্ছে। তা না হলে এসআইআরের আগেই বিজেপি নেতারা কীভাবে বলে দিচ্ছেন, এত নাম বাদ যাবে?

    এই পার্টের বিএলও রুপালি মার্ডি ২০১ পার্টের ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় গরমিল আছে বলে ইআরও তথা এসডিওকে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, এই পার্টে ৬৫১ জন ভোটার। কিন্তু, ভোটার লিস্টের সিরিয়াল নম্বর ৫৯৬ এ শেষ হয়েছে। বাকি ৫৫জনের নাম নেই। যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের ২০০২ সালের আগে ও পরের ভোটার তালিকায় নাম ছিল। অনেকের ২০২৫ সালের ভোটার তালিকায় নাম আছে। হতে পারে এদের নাম ছাপতে ভুল হয়েছে অফিস লেভেলে। এসআইআরের এই সময় ‘ম্যাপিং অব ইলেক্টোরাল’ এর জন্য ওই তালিকা অতি গুরুত্বপূর্ণ। নচেৎ এলাকায় কাজ করা কঠিন হয়ে পড়বে। ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারকে একই অভিযোগ জানিয়েছেন রামপুরহাট-১ ব্লকের বিডিও অঙ্কুর মিত্র। অভিযোগের কপি পাঠানো হয়েছে জেলাশাসকের সিএ, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেনারেল) এবং ওসি ইলেকশনের কাছেও।  

    উল্লেখ্য, রবিবার তারাপীঠে দলীয় কর্মসূচিতে এসে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এসআইআর প্রসঙ্গে জানান, ২০০২ সালের ভোটার লিস্টের হার্ড কপি আর কমিশনের ওয়েবসাইটে আপলোড করা বর্তমান তালিকার মধ্যে বিস্তর ফারাক। তালিকায় অনেকের সিরিয়াল নম্বর কেটে গিয়েছে। তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, যেভাবে বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, তাতে বিজেপির ‘হিডেন এজেন্ডা’ বেরিয়ে পড়েছে। এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। দরকারে আইনি সহয়তা দেব। যদিও বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা বলেন, হয়তো ওদের দেখার ভুল। নিশ্চিতভাবে তাঁদের নাম থাকবে। একজনও আদিবাসীর নাম বাদ যাবে না।
  • Link to this news (বর্তমান)